নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ১৪৪টি দলের কোনোটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকতে পারেনি। এমনকি ৪৩ হাজার ৩১৬ পৃষ্ঠার বিশাল নথিপত্র জমা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ফলে, সব দলকেই ঘাটতি পূরণের জন্য ১৫ দিনের সময় দিয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, আবেদনকারী দলগুলোর জমা দেওয়া তথ্যাদি যাচাই-বাছাই করে বড় ধরনের ঘাটতি পাওয়া গেছে। আইন অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য একটি দলের কার্যকর কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ন্যূনতম ২০০ জন ভোটারের সমর্থন থাকার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। অধিকাংশ দলই এই প্রধান শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি।
এদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৪৩ হাজারেরও বেশি পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দিয়ে আলোচনায় আসে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ নথিও ইসিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। দলটির আবেদনেও প্রয়োজনীয় শর্তের ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানান, "আইনের প্রধান শর্তগুলো পূরণের পাশাপাশি আরও কিছু নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে এসব শর্ত পূরণ না হওয়ায় আবেদনকারী দলগুলোকে ঘাটতি পূরণের জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে।" তিনি আরও জানান, প্রথম ধাপে ৬২টি এবং দ্বিতীয় ধাপে এনসিপিসহ বাকি ৮২টি দলকে চিঠি পাঠানো হবে।
এইদিকে, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব ঘাটতি রয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পূরণ করে পুনরায় জমা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি। শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা, আদালতের নির্দেশ এবং অন্যান্য কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপার নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল। যদিও সম্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে।
গত ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে আবেদন জমা দেওয়ার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। পরে কয়েকটি দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে সেই সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যে ১৪৪টি দল মোট ১৪৭টি আবেদন জমা দেয়। এখন দেখার বিষয়, ১৫ দিনের মধ্যে কতটি দল তাদের ঘাটতি পূরণ করে নিবন্ধনের দৌড়ে টিকে থাকতে পারে।
ডিবিসি/এএনটি