ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মাত্র ২০ টাকার জন্য এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যা করেছে তারই সহপাঠী। নিহত আমির হামজা (১৩) উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের সাইরুদ্দিনের ছেলে এবং চান্দড়া নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় মো: ফরহাদ রেজা (১৬) নামের একই মাদ্রাসার এক ছাত্রকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১শে অক্টোবর) সন্ধ্যায় চর চান্দড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ডোবার ভেতরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এরপর বস্তাটি খুলে শিশুটির মরদেহ দেখতে পেয়ে তারা দ্রুত আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহত আমির হামজার বাবা সায়েম উদ্দীন বিশ্বাস জানান, তার ছেলে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসার পোশাক পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। এরপর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম জানান, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা শুরু হয়েছে।
এদিকে, এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো: ফরহাদ রেজা (১৬) নামের একই মাদ্রাসার এক ছাত্রকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ রেজা স্বীকার করে যে, সে পরিকল্পিতভাবে আমির হামজাকে হত্যা করেছে। ফরহাদ রেজা বর্তমানে থানা হাজতে রয়েছে এবং এ বিষয়ে থানায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরে, বুধবার (২২শে অক্টোবর) সন্ধ্যায় সহকারী পুলিশ সুপার, মধুখালি সদর সার্কেল, মো: আজম খান সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি হত্যার কারণ বর্ণনা করে বলেন, নিহত আমির হামজার কাছ থেকে হত্যাকারী ফরহাদ রেজা ২০ টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকা পরিশোধ না করায় আমির হামজা ফরহাদের বাবা-মাকে তুলে গালিগালাজ করেছিল। এর জেরেই ফরহাদ রেজা প্রতিশোধ নিতে আমির হামজাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নিহত আমির হামজার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ডিবিসি/এএমটি