বিবিধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ফ্লোটিলা ঠেকাতে ব্যস্ত ইসরায়েল, সুযোগে সাগরে জাল ভরে মাছ ধরেছে গাজাবাসী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ৪ঠা অক্টোবর ২০২৫ ০৪:০৫:৫৪ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গাজায় মানবিক ত্রাণবাহী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’কে বাধা দিতে যখন ব্যস্ত ছিল ইসরায়েলি নৌবাহিনী, ঠিক সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলেছিলেন ফিলিস্তিনি জেলেরা। দীর্ঘ সময় পর তাদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ।

এই দুর্লভ মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা অবরুদ্ধ গাজাবাসীর টিকে থাকার লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

 

গত বুধবার (১লা অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ৪০টিরও বেশি দেশের ৪৫০ জনেরও বেশি ত্রাণকর্মীকে বহনকারী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের জাহাজবহরটি আটক করে। ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল এই দলটি।

 

ইসরায়েলি নৌবাহিনী যখন এই অভিযানে পুরোপুরি মনোযোগ দিয়েছিল, সেই সুযোগে গাজার জেলেরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গভীরে সমুদ্রে যাওয়ার সাহস করেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক ডজন জেলে সমুদ্রসৈকতে জাল টেনে তুলছেন এবং উপস্থিত জনতা উল্লাস করছে। অবরুদ্ধ জীবনে এটি ছিল এক বিরল আনন্দের মুহূর্ত।

 

স্থানীয় গণমাধ্যমকে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ফ্লোটিলার কারণে ইসরায়েলি টহল অন্যদিকে ব্যস্ত থাকায় জেলেরা কয়েক মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো গুলি বা আটকের ভয় ছাড়াই গভীর পানিতে জাল ফেলার সুযোগ পেয়েছেন।

 

অনলাইনে ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যবহারকারীরা এটিকে প্রতিকূলতার মুখে ফিলিস্তিনিদের সহনশীলতার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন। অনেকে এটিকে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ বললেও, অনেকেই গাজাবাসীর স্বাধীনভাবে মাছ ধরার অধিকার না থাকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে ইসরায়েল সমুদ্র এবং খামারের জমিতে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশাধিকারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। অসলো চুক্তি অনুযায়ী, জেলেদের ২০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মাছ ধরার কথা থাকলেও, তাদের মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। এই নিয়ম অমান্য করলে প্রায়ই গুলি ও নৌকা বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা ঘটে।

 

গাজার কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধের কারণে এই অঞ্চলের মৎস্য খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৪,৬০০ টন মাছের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, যার আর্থিক মূল্য ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। প্রায় ৪,০০০ জেলে তাদের চাকরি হারিয়েছেন, যা গাজার ভয়াবহ খাদ্য সংকটকে আরও তীব্র করেছে। একসময় প্রোটিনের প্রধান উৎস মাছ এখন সেখানে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে।

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন