জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শেষ জন্মদিনটি কেটেছে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে।
বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার শেখ মুজিবের জীবনের বড় একটা অংশ কেটেছে কারাগার ও রাজনীতির মাঠে। জন্মদিন পালনের সময়-সুযোগ পেতেন না। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর শেষ জন্মদিনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নেতাকর্মী ও শিশু কিশোরদের ভালবাসা আর শুভেচ্ছায় কাটে দিনটি। কেমন ছিল সেদিনটি, কারা ছিলেন তাঁর সঙ্গে। সে-দিনটির দুর্লভ সব ছবি সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে উদযাপিত শেষ জন্মদিনের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন সাইফুল জুয়েল।
১৭ই মার্চ, ১৯৭৫। স্বাধীন বাংলার রূপকার ও স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর ৫৫তম জন্মদিন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাসভবনের সামনে সাদামাটা আয়োজন। দলীয় নেতাকর্মীরা ফুল নিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান বঙ্গবন্ধুকে। সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে ফুলের মালা গলায় জড়িয়ে নিয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও।
সরকার প্রধানের জন্মদিন ঘিরে ছিলো কেন্দ্রীয় খেলাঘর আর কচিকাঁচার আসরের ক্ষুদে শিশুদের গান।শিশু-কিশোররা বঙ্গবন্ধুকে সামনে পেয়ে গান গেয়ে শোনায়। ফুলের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।
জন্মদিনের সেই মুহুর্তগুলোর ছবি তুলেছিলেন আলোকচিত্রী পাভেল রহমান। এছাড়া, শিশুদের সাথে ছিলেন খেলাঘরের সংগঠক পান্না কায়সার। তাদের স্মৃতিতে এখনো জীবন্ত সেই দিনের মূহুর্তগুলো।
আলোকচিত্রী পাভেল রহমান বলেন, 'ঐদিন খেলাঘর এবং কচিকাঁচার আসরের শিশু-কিশোররা বঙ্গবন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে আসে। তারা বঙ্গবন্ধুকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়, কবিতা শোনায়। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।'
খেলাঘরের সংগঠক পান্না কায়সার বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর সেবারের জন্মদিনে এক শিশু তার স্কার্ফটি বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেয়। এতে, বঙ্গবন্ধু খুব আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। সেদিন বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন তোরাইতো সোনার মানুষ, তোদের নিয়েই আমি সোনার দেশ গড়বো।'
সেদিন বঙ্গবন্ধু পরিষদ তহবিলের পুরস্কার বিতরণ করা হয় গণভবনে। পরে, জাতির পিতা পুরষ্কার বিজয়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপরই তিনি ছুটে যান জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে। সেখানে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাকে শুভেচ্ছা জানায়। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন আপ্লুত। মেতেছিলেন শিশুসুলভ আচরণে।
রৌদ্রজ্জ্বল সেই দিনটিতে সংসদ ভবনে প্রস্তুত ছিলো বঙ্গবন্ধুর সরকারি গাড়ি ও নিরাপত্তারক্ষীরা। শিশুদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই তিনি চলে আসেন গণভবনে। সেখানে বিকেলে ক্রীড়া জগতের তারকা ও বিদেশি কূটনীতিকরা বঙ্গবন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।