বাংলাদেশ, জাতীয়, অর্থনীতি

বছরে ১৬০৪ কোটি টাকা টোল আসবে পদ্মা সেতু থেকে

সামান্তা সাইদ খান

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১৩ই জুন ২০২২ ০৪:৪৫:০০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মতে, ফেরি পারাপারে বিদ্যমান টোল হারের ভিত্তিতে টোল সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে চালু থাকা মাওয়া-জাজিরা রুটের ফেরিগুলিতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃক সংগৃহীত টোল হার অনুসারে (নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত),আদায়ের হার প্রতি মাসে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং বার্ষিক ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। দেড় গুণ হলে প্রতি মাসে টোল দাঁড়াবে ১০৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা হিসেবে ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

পদ্মা সেতু থেকে মাসিক টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৩.০৬ কোটি টাকা। বছরের হিসাবে তা হবে ১ হাজার ৭০৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ টাকা দিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও নির্মাণ ব্যয়ের ঋণ পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু কর্তৃপক্ষ কোনো উন্নয়ন সহযোগী বা সংস্থাকে নয়, ৩৫ বছরে বাংলাদেশ সরকারকে সুদসহ ৩৬ হাজার কোটি টাকা দেবে।

 

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, পদ্মা বহুমুখী সেতুটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০,১৯৩.৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে পুরো ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। চুক্তির অনুচ্ছেদ 2 অনুসারে, প্রকল্পটি সমাপ্ত হওয়ার পরে প্রতি বছর ১% হারে সুদ সহ ৩৫ বছরের জন্য ১৪০ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া নকশা প্রণয়নের সময় নেওয়া ২১১ কোটি টাকার বিপরীতে ৩৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সেতু নির্মাণের জন্য সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। আগামী ৩৫ বছরে সরকারকে সুদ দিতে হবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা।

 

ঋণ পরিশোধ, সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ, নদী ব্যবস্থাপনা ও টোল, ট্যাক্স এবং ভ্যাট পরিশোধের জন্য অর্থের প্রয়োজন। সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর টোল বসিয়ে এই টাকা আদায় করা হবে।

 

অন্যদিকে, পরামর্শক সংস্থার ২০১০ সালে জমা দেওয়া পদ্মা সেতুর বিশদ অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাফিক পূর্বাভাস হিসাবে ফেরি টোল হারের দেড় গুণ হিসাবে প্রতি মাসে টোল হবে ১৩৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। ২০২২-এর জন্য। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, সরকার বার্ষিক ১,৬০৩.৯৬ কোটি টাকা টোল আদায় করবে বলে আশা করছে।

 

সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে সম্পাদিত ঋণ চুক্তিতে উল্লিখিত ৩৫ বছরের ঋণ পরিশোধের সময়সূচী অনুযায়ী সেতুতে যানবাহন চলাচলের প্রথম বছরে ৫৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হয়। . এটি ধীরে ধীরে বাড়বে এবং কিছু বছরে ১,৪৬৫ কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে হবে। এছাড়া সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা ব্যয়, নদী ব্যবস্থাপনা, ভ্যাট ও ট্যাক্স পরিশোধ সবই করতে হবে টোলের টাকা থেকে। টোল আদায়ের ক্ষেত্রে এসব বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে।

 

পদ্মা সেতুতে চলাচলকারী যানবাহনের টোল নির্ধারণ করে সার্কুলার জারি করেছে সরকার। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মোটরসাইকেলের টোল ১০০ টাকা, বড় বাসের টোল ২৪০০ টাকা, মাঝারি বাসের টোল ২ হাজার টাকা, গাড়ি ও জিপের টোল ৮৫০ টাকা, ফোর এক্সেল টেইলারের টোল ৬ হাজার টাকা, মাইক্রোবাসের টোল। ১৩০০ টাকা এবং মিনিবাস (৩১ আসন বা তার কম)। ১৪০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (সচিব) মো. মনজুর হোসেন বলেন, সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে আমরা পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করেছি। টোল আদায় থেকে যে ঋণ আসবে সুদসহ সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের ঋণ, ফেরি ভাড়া এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে টোলের হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন