ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বহুল আলোচিত স্মার্টফোন ‘ট্রাম্প টি১’ বাজারে আসার আগেই বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। উন্মোচনের মাত্র দশ দিনের মাথায় ফোনের ওয়েবসাইট থেকে ‘মেড ইন দ্য ইউএসএ’ বা ‘আমেরিকায় তৈরি’ এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা নিয়ে প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত ১৬ই জুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরা যখন এই ফোনটি আনার ঘোষণা দেন, তখন এর প্রচারণামূলক সকল উপাদান এবং ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে এটিকে ‘আমেরিকায় তৈরি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার (২৫শে জুন) সাংবাদিকরা দেখতে পান, ওয়েবসাইট থেকে সেই পরিচিত ‘মেড ইন দ্য ইউএসএ’ ট্যাগলাইনটি অদৃশ্য হয়ে গেছে। পূর্বে যে ব্যানারে “আমাদের মেড ইন দ্য ইউএসএ টি১ ফোন প্রি-অর্ডার করুন” লেখা ছিল, সেখানে এখন শুধু “নতুন টি১ ফোন” লেখা রয়েছে। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ভার্জ’ প্রথম এই পরিবর্তনটি শনাক্ত করে।
তবে, এই পরিবর্তনের পরেও ট্রাম্প মোবাইল সংস্থা দাবি করছে, ফোনটি আমেরিকাতেই তৈরি হবে। বিবিসির কাছে একজন মুখপাত্র বলেছেন, “যেকোনো জল্পনা সম্পূর্ণ অসত্য।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এই বছরের শেষের দিকে ফোনটি বাজারে আনতে উন্মুখ। তবে এই সময়ের মধ্যে যে কেউ তাদের বর্তমান ফোন দিয়েই ট্রাম্প মোবাইলে যুক্ত হতে পারেন।”
বর্তমানে কোম্পানির ওয়েবসাইটে ফোনের বিবরণে নতুন কিছু ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন, ফোনটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে ‘আমেরিকান-গর্বিত ডিজাইন’ (American-Proud Design)-এর কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও উল্লেখ করা হয়েছে, ফোনটিকে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই জীবন্ত করে তোলা হয়েছে’ এবং ‘প্রতিটি ডিভাইসের পিছনে রয়েছে আমেরিকান হাত’।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরা যখন প্রথম এই সোনারঙা স্মার্টফোনের ঘোষণা দেন, তখন থেকেই বিশেষজ্ঞরা আমেরিকায় সম্পূর্ণ নতুন করে একটি ফোন তৈরির ধারণা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিংলং দাই বলেন, “তাদের কাছে এখনো একটি কার্যকর প্রোটোটাইপও নেই। এটি (আমেরিকায় তৈরি হওয়া) অত্যন্ত অসম্ভব একটি ব্যাপার। এর জন্য আপনাকে একটি অলৌকিক ঘটনার আশা করতে হবে।”
সিসিএস ইনসাইট-এর বিশ্লেষক লিও গেবি বলেছেন, স্মার্টফোন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ‘উচ্চ প্রযুক্তির সাপ্লাই চেইন বা যোগান শৃঙ্খল’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নেই, বিশেষ করে সেপ্টেম্বরে ফোনটি প্রকাশের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা তৈরি করা প্রায় অসম্ভব। তার মতে, বিদেশি যন্ত্রাংশ এনে আমেরিকায় ফোনটি সংযোজন করে সেটিকে ‘আমেরিকান’ বলে দাবি করাই সবচেয়ে সম্ভাব্য পথ হতে পারে।
এছাড়া ফোনের স্ক্রিন সাইজ ৬.৭৮ ইঞ্চি থেকে কমিয়ে ৬.২৫ ইঞ্চি করা হয়েছে বলে হচ্ছে।
তথ্যসূত্র বিবিসি।
ডিবিসি/এমইউএ