বিবিধ

বন্ধুদের সঙ্গে বাজি, পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে হেঁটে ২৭ বছর পর বাড়ি ফিরছেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

১ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ২৯ বছর বয়সে পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন প্যারাট্রুপার কার্ল বুশবি। তিনি ভেবেছিলেন এই দুঃসাহসিক যাত্রা শেষ করতে তাঁর সর্বোচ্চ ১২ বছর লাগবে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতা ও বাধার কারণে সেই ১২ বছরের জায়গায় কেটে গেছে দীর্ঘ ২৭ বছর। এখন ৫৬ বছর বয়সী বুশবি তাঁর 'গলিয়াৎ এক্সপিডিশন' এর শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন, যা ২০২৬ এর সেপ্টেম্বরে তাঁর নিজ শহর ইংল্যান্ডের হুলে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৯৮ সালে চিলির পান্তা অ্যারেনাস (পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম) থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে বুশবি দুটি কঠিন নিয়ম মেনে চলেছেন কোনো মোটরচালিত পরিবহণ ব্যবহার করা যাবে না এবং হেঁটে গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত বাড়ি ফেরা যাবে না।

 

এই ২৭ বছরে তিনি পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন পাতাগোনিয়া ও আন্দিজ পর্বতমালা, মধ্য আমেরিকা, মেক্সিকো ও পুরো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং এশিয়ার কিছু অংশ।

 

পথের মাঝে তিনি পানামা ও কলম্বিয়ার বিপজ্জনক ডারিয়েন গ্যাপ পাড়ি দিয়েছেন, বরফ ভেঙে পার হয়েছেন আলাস্কা ও রাশিয়ার মধ্যবর্তী বেরিং প্রণালি এবং কাজাখস্তান থেকে আজারবাইজান পর্যন্ত টানা ৩১ দিন ধরে সাঁতারে কাস্পিয়ান সাগর পার হয়েছেন। এছাড়া ভিসার জটিলতা, রাজনৈতিক বাধা, অর্থনৈতিক মন্দা ও মহামারির কারণে বারবার তাঁর যাত্রা থমকেছে।

 

শুরুতে পকেটে মাত্র ৫০০ ডলার নিয়ে পথে নামা বুশবিকে ক্ষুধা মেটাতে রাস্তার পাশ থেকে খাবার কুড়িয়ে খেতে হয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর এই অবিশ্বাস্য অভিযানের কথা ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ, পরিবার এবং বিভিন্ন কোম্পানি তাঁকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে।

 

বুশবীর মতে, এই যাত্রার সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, পৃথিবীটা আসলে আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি দয়ালু ও সুন্দর। পথে তিনি যত মানুষের দেখা পেয়েছেন, তাদের ৯৯.৯৯ শতাংশই তাঁকে বিপদের সময় সাহায্য করেছেন। মানুষের এই ভালোবাসাই তাঁকে ২৭ বছর ধরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

 

বর্তমানে হাঙ্গেরিতে পৌঁছানো বুশবি তাঁর শহর হাল থেকে আর মাত্র ৯৩২ মাইল দূরে আছেন। দীর্ঘদিনের লক্ষ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি স্বীকার করেছেন যে হঠাৎ থেমে যাওয়া এবং নতুন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া তাঁর জন্য কঠিন হবে। তবে বাড়ি ফিরে বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে এই বিশ্ব-বিজয়ী অভিযাত্রীর।

 

তথ্যসূত্র ওয়াশিংটন পোস্ট

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন