স্কুলের নিয়মিত পাঠ্যক্রম আছে। পাশাপাশি রয়েছে বন ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণের শিক্ষা। আর স্কুলজীবন থেকেই শিক্ষার্থীরা বন ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে সচেতন হয়ে উঠছে, নিজেদের মতো করে ছোট ছোট ভূমিকা রাখছে। বান্দরবানের গহীনে এমন দুটি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।
জন্ম থেকে বন পাহাড়ের কোলে বড় হয়ে ওঠা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা, বন ও বন্যপ্রাণি সম্পর্কে সজাগ। এরপরও তারা স্কুলে এ বিষয়ে বিশেষ শিক্ষা পাচ্ছে, যেন বন ও বন্যপ্রাণি রক্ষায়ও উদ্যোগী হয়। স্কুলের নামও চমৎকার। ২০১৫ সাল থেকে এরকম ২টি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। একটি তম বা সূর্যভালুক, অন্যটি লি-পুক বা কচ্ছপ। তম ও লি-পুক মুরং ভাষা।
খেলার ছলে বা খাদ্য চাহিদা পূরণে অনেক সময় এই শিশুরা বন্যপ্রাণি মেরেও ফেলে। সেটি যেন আর না করা হয়, স্কুলে তাই শেখানো হয়। একইসঙ্গে শেখানো হয় বনক্ষার বিষয়টি।
তম বিদ্যালয়ের শিক্ষক আকিলা ত্রিপুরা জানান, স্কুলে গাছ রক্ষার শিক্ষা দিয়ে আগামীর জন্য শিশুদের সচেতন করে তলা হচ্ছে। আরেক শিক্ষক মাংইয়া ম্রো জানান, গ্রামবাসিদের মধ্যে এ শিক্ষা ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলা হয় শিক্ষার্থীদের।
বন্যপ্রাণি কমার হিড়িক বিশ্বব্যাপী। সবশেষ ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড একটি জরিপ চালায়। সে অনুযায়ী, তার আগের ৪ দশকে বিশ্বজুড়ে ৬০ শতাংশ বন্যপ্রাণি কমেছে এবং প্রতিবছর কমার হার ২ শতাংশ।
আর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার-আইইউসিএন বলছে, বাংলাদেশে ১১৭৩ জাতের প্রাণী বিলুপ্ত। শুধু বান্দরবানে জরিপ চালিয়ে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স বলছে, সেখানে ৬৬টি জাতের প্রাণিকে শিকার করে মেরে ফেলা হচ্ছে।
ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স এর গবেষক শাহরিয়ার রহমান সিজার জানান, এই প্রজন্মকে সচেতন করার পাশাপাশি যে বনগুলো টিকে আছে সেগুলো সংরক্ষণ, এবং বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী কৃত্রিমভাবে প্রজননের মাধ্যমে বনাঞ্চলে ফিরিয়ে দেয়া যেতে পারে।'
তবে আশার কথা, বাংলাদেশে কিছু প্রাণী বিলুপ্তির তালিকায় চলে গেলেও, ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ে কিছু প্রাণির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যেগুলো অতি বিপন্ন। যেমন, গাউর, সাম্বার, মেঘলা চিতা, মার্বেল চিতা, বন্য শূকর, বন্য কুকুর, সূর্য ভালুক ও ধনেশ পাখি।