পরে বেলা ১১টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল কাদের সড়কে একটি ডাহুক শিকার করার সময় স্থানীয় সাংবাদিকের সামনে পড়লে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত দুই কারারক্ষী হলেন- মোঃ হাফিজুর রহমান ও মোঃ রফিকুল ইসলাম। তারা দুজনেই বরগুনা জেলা কারাগারে কর্মরত। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম সহকারী প্রধান কারারক্ষী এবং হাফিজুর রহমান কারারক্ষী পদে কর্মরত আছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও রফিকুল ইসলাম পাখি শিকার করে সাংবাদিকদের হাতে ধরা পড়েছিলেন এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ সাইফুল ইসলাম মিরাজ বলেন, সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যাওয়ার সময় আমরা ওই দুই ব্যক্তিকে এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করতে দেখি। হাফিজুর রহমানের হাতে তখন একটি ডাহুক ছিল এবং রফিকুল ইসলামের হাতে ছিল এয়ারগান। ডাহুকটি তখনো জীবিত ও যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। আমরা ভিডিও ধারণ করতে শুরু করলে তারা দ্রুত মোটরসাইকেলে উঠে পালিয়ে যায়। তাদের মোটরসাইকেলে ঝোলানো একটি ব্যাগে অন্তত ২৫টি শিকার করা পাখি দেখা গেছে।

স্থানীয় সাংবাদিক জয়দেব রায় জানান, সহকারী প্রধান কারারক্ষী রফিকুল ইসলাম এর আগেও একই অপরাধ করে তার কাছে অঙ্গীকার করেছিলেন যে আর পাখি শিকার করবেন না। কিন্তু তিনি সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।

পরিবেশকর্মী মুশফিক আরিফ বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনের রক্ষক হয়ে যারা এ ধরনের কাজ করেন, তাদের সাধারণের চেয়ে বেশি শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কারারক্ষী মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। রফিকুল ইসলাম আমাকে ডেকে নিয়েছিলেন। তিনি আমার মোটরসাইকেলে চড়ে পাখি শিকার করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানার পর রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছেন এবং তার এয়ারগান জব্দ করেছেন। আমার কাছ থেকে লিখিত জবাব নেওয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে সহকারী প্রধান কারারক্ষী মোঃ রফিকুল ইসলামের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বন বিভাগের বরগুনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আখতারুজ্জামান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি আগে অবগত ছিলেন না। তবে দ্রুতই খোঁজ নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

ডিবিসি/ এসএফএল