জাতীয়, জেলার সংবাদ

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার এক বছর আজ

বরগুনা প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৬শে জুন ২০২০ ০৩:৩৭:০৪ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো আজ। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলেও, রায় হওয়ার পর্যায়ে এসে করোনার কারণে থেমে গেছে বিচারিক কার্যক্রম। এতে হতাশ নিহত রিফাতের পরিবার।

গত বছর ২৬শে জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন, স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। রিফাতকে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ঘটনার তিনদিন পর ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ ''জিরো জিরো সেভেন''-এ রিফাত হত্যার পরিকল্পনার কথোপকথন ফাঁস হয়। এরপর থেকেই গ্রেপ্তার হতে থাকে হত্যায় অভিযুক্তরা। এরইমধ্যে ২রা জুলাই রিফাত হত্যার মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

২৭শে জুন রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ সদর থানায় মামলা করেন। সাক্ষি হন প্রত্যক্ষদর্শী রিফাতের স্ত্রী মিন্নি। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে ১৬ই জুলাই মিন্নিকে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিনই মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড হয়। পরে পুলিশের তদন্তে মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও কিশোর ১৪ জনসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে দুটি আদালতে বিচার শুরু হয়।

রিফাত শরীফ হত্যায় চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হচ্ছে: রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২), আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) এবং কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।

শিশু অপরাধী হিসেবে চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হচ্ছে: রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজী (১৭), রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার (১৫), আবু আবদুল্লাহ ওরফে রায়হান (১৬), ওলিউল্লাহ ওরফে অলি (১৬), জয় চন্দ্র সরকার ওরফে চন্দন (১৭), মো. নাইম (১৭), তানভীর হোসেন (১৭), নাজমুল হাসান (১৪), রাকিবুল হাসান নিয়ামত (১৫), সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মহিবুল্লাহ (১৭), মারুফ মল্লিক (১৭), প্রিন্স মোল্লা (১৫), রাতুল শিকদার জয় (১৬) এবং আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ (১৬)।

প্রাপ্তবয়স্কদের মামলায় ৩০ কার্যদিবসে ৭৭ সাক্ষীর মধ্যে ৭৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন। গোলাম সরোয়ার নামে একজন প্রবাসে থাকায় একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আর অপ্রাপ্তবয়স্কদের মামলায় ৭৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন। মামলার ২৪ আসামির মধ্যে মিন্নিসহ ৮ জন জামিনে রয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মুছা বন্ড পলাতক রয়েছে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলা ও বাবার জিম্মায় থাকার শর্তে জামিনে আছেন মিন্নি।

এদিকে, টানা দুইমাস সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায়ের পর্যায়ে এসে করোনার কারণে থেমে গেছে বিচার কার্যক্রম। একমাত্র ছেলের এমন নির্মম মৃত্যুর পর কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারেনি রিফাতের পরিবার। মা সেই থেকেই শয্যাশায়ী প্রায়। বাবা দুলাল শরীফও ভুগছেন হৃদরোগে। একমাত্র ভাইয়ের শোকে মুহ্যমান বোন মৌ'কে সামলাতে হয় সংসার।

অন্যদিকে, জামিনে থাকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের বরাবরের মতই দাবি, তার মেয়ে নির্দোষ, ষড়যন্ত্র করে মামলায় আসামি করার পর সাক্ষিদের প্রভাবিত করে হত্যার দায় চাপিয়ে দেয়ার সব প্রচেষ্টা করেছে পুলিশ। অবশ্য আসামী পক্ষের আইনজীবীর প্রত্যাশা, মামলায় ন্যায় বিচার পাবেন, মিন্নি এ মামলায় খালাস পাবে।

আরও পড়ুন