চীনা তরুণদের মধ্যে এক অদ্ভুত প্রবণতা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, যেখানে তারা বেতন পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো টাকা খরচ করে অফিসে যাচ্ছেন শুধু কাজ করার ভান করতে!
দেশটিতে চাকরির বাজারের সংকট এবং তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এই নজিরবিহীন পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। চাকরির সুযোগ কমে যাওয়ায় এবং অর্থনীতি দুর্বল হওয়ায় অনেক তরুণ-তরুণী ঘরে বসে থাকার চেয়ে একটি নকল অফিসের পরিবেশে সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চীনের বড় বড় শহরগুলোতে, যেমন- সাংহাই, শেনজেন, চেংদু এবং উহানে গড়ে উঠেছে বিশেষ ধরনের প্রতিষ্ঠান। এগুলো দেখতে পুরোপুরি পেশাদার অফিসের মতো, যেখানে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মিটিং রুম এবং চা-কফির ব্যবস্থা রয়েছে।
এখানে অংশগ্রহণকারীরা মূলত নিজেদের ব্যক্তিগত কাজ করেন, যেমন নতুন চাকরির জন্য আবেদন করা বা নিজেদের কোনো স্টার্টআপের পরিকল্পনা করা। এর জন্য তাদের প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ ইউয়ান খরচ করতে হয়, যার বিনিময়ে অনেক সময় দুপুরের খাবার এবং অন্যান্য পানীয়ও দেওয়া হয়।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থী। তাদের অনেকে আসেন শুধু ছবি তুলে নিজেদের শিক্ষকদের কাছে ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা দেখানোর জন্য, আবার কেউ আসেন চাকরির জন্য বাবা-মায়ের চাপ থেকে বাঁচতে। বাকি ৬০ শতাংশ গ্রাহক হলেন ফ্রিল্যান্সার বা ডিজিটাল নোম্যাড, যারা কোনো নির্দিষ্ট অফিসের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করেন। এদের মধ্যে ই-কমার্স ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে অনলাইন লেখকও রয়েছেন। এখানে যারা আসেন, তাদের গড় বয়স প্রায় ৩০ বছর।
এই প্রবণতার পেছনে মূল কারণ হলো চীনের উচ্চ বেকারত্বের হার, যা বর্তমানে তরুণদের মধ্যে ১৪ শতাংশেরও বেশি। এমনকি উচ্চশিক্ষিত স্নাতকরাও চাকরি পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। সরকারি তথ্যমতে, এ বছর দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক, অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ২২ লাখ নতুন স্নাতক চাকরির বাজারে প্রবেশ করবে, যা সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।
সূত্র: বিবিসি
ডিবিসি/এফএইচআর