বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

বাংলাদেশি দুই বোন যে ভাষাটি বাঁচিয়ে রেখেছেন

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:২৬:৪৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বাংলাদেশে এমন একটি ভাষা রয়েছে, যে ভাষায় কথা বলতে পারেন মাত্র দুই জন। বলা চলে, বাংলাদেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এই দুই বোনই বাঁচিয়ে রেখেছেন ‘খাড়িয়া’ নামক এই ভাষা। ভেরোনিকা কেরকেট্টা ও ক্রিস্টিনা কেরকেট্টা নামের দুই বোন ব্যতীত পৃথিবীর আর কেউই ‘খাড়িয়া’ ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন না।

গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আক্ষেপ জানিয়ে ক্রিস্টিনা কেরকেট্টা বলেন, ‘আমরা দুই বোন আছি। আমরা মারা গেলে এই ভাষাও শেষ হয়ে যাবে। আমাদের দুই বোনের মতো কেউ আর কথা বলতে পারবে না।’ তার বড় বোন ভেরোনিকা কেরকেট্টার আক্ষেপ, ‘এখন যদি আমরা দুই বোন মারা যাই; এই ভাষাও শেষ আমাদের সাথে সাথে। আর কেউ তো বলতে পারে না।’
 

ভেরোনিকা কেরকেট্টা খাড়িয়া ভাষা ও বাংলায় আরও জানান, ‘আমাদের মা-বাবা ভারতের রাঁচি থেকে এখানে আসেন। এখানেই আমাদের জন্ম। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি বাবা-মা ‘খাড়িয়া’ ভাষা বলত। তাদের কাছ থেকে শেখা। বর্তমানে বাগানে অনেক ভাষার মিশ্রণে আমাদের সন্তানরা মাতৃভাষা বলতেও পারে না, এমনকি বোঝেও না। এই বাগানের মধ্যে আমরা দুই বোন খাড়িয়াতে কথা বলতে পারি। সুখ-দুঃখে আমরা আমাদের দুই বোনের মধ্যেই আমাদের ভাষায় কথা বলি। এতে আমাদের প্রাণ খুলে মনের ভাব প্রকাশ করি। পরিবারের অন্যরাসহ বাগানে কারও সঙ্গে আমরা দুই বোন প্রাণ খুলে মনের মতো করে কথা বলতে পারি না। এটাই আমাদের দুঃখ।’
 

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের চা বাগানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাড়িয়াদের বাস। তাদের মাতৃভাষার নামও ‘খাড়িয়া’। চা বাগানে কর্মরত খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রাণের ভাষা ‘খাড়িয়া’। কিন্তু সময়ের গতিধারায় চা বাগান থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ভাষাটি। বর্তমানে খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর আপন দুই বোন ৮০ বছর বয়সি ভেরোনিকা কেরকেট্টা ও ৭৫ বছর বয়সি খ্রিস্টিনা কেরকেটা আদি খাড়িয়া ভাষায় কথা বলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই দু’জনের মৃত্যু হলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই ভাষা।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

ডিবিসি/আরপিকে

আরও পড়ুন