বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিরসনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভা বাতিল হওয়ায় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো খোলার বিষয়ে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২রা সেপ্টেম্বর) গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসন ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হলেও, সিদ্ধান্তের লিখিত পত্রে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর না করার অভিযোগে বুধবারের (৩ সেপ্টেম্বর) নির্ধারিত সিন্ডিকেট সভাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। এর ফলে অচলাবস্থা নিরসনের আশা আপাতত বৃথা গেল।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক জানান, আগের রাতে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত ও দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো সিন্ডিকেটে উত্থাপনের জন্য একটি লিখিত কার্যবিবরণী প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু স্বাক্ষর করার জন্য আহ্বান জানানো হলেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হননি। লিখিত প্রস্তাবনা ছাড়া সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. শহীদুল আরও বলেন, যেহেতু সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়নি, তাই পূর্বের আলোচনার সিদ্ধান্তগুলোও কার্যকর হচ্ছে না। এর ফলে হল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা সম্ভব হচ্ছে না এবং ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্থানীয় প্রশাসনের অধীনেই থাকছে।
এই অভিযোগের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ, পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম, তারা তো সবাই স্বাক্ষর করেছি। তাহলে নতুন করে আবার কেন স্বাক্ষর করতে হবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রশাসনের এই অবস্থানে আমরা একমত নই। তিনি আরও জানান, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। সিদ্ধান্তগুলো ছিল জরুরি সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে হল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হবে, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কোনো শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে এ্যাকাডেমিক বা প্রশাসনিকভাবে হেনস্তা করা হবে না মর্মে প্রশাসন লিখিত বিবৃতি দেবে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অর্থাৎ ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করা হবে। এই মর্মে বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশেরও কথা ছিল। কিন্তু সিন্ডিকেট সভা বাতিল হওয়ায় এর কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ডিবিসি/এএমটি