বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুরে মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় এক নিরীহ পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, স্থানীয় ফারুক শেখের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে এবং হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সদর উপজেলার যাত্রাপুরের মোসিদপুর এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। দিন মোহাম্মদ শেখের ছেলে হাফিজ শেখ, ফারুক শেখ এবং ফারুকের মেয়ে ইভা, ছেলে নাইম শেখ ও মৃত হারুন শেখের ছেলে নাহিয়ান শেখসহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সশস্ত্র দল স্থানীয় হোসাইন কবির ছোটর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালায়। পরবর্তীতে তারা ছোটর বসতবাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
হামলার শিকার মোঃ হোসাইন কবির ছোট অভিযোগ করে বলেন, "ফারুক শেখের নেতৃত্বে হামলাকারীরা আমার বাড়িতে লুটপাট চালায়। তারা নগদ প্রায় ১ লাখ টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কারসহ মোট ৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় ফারুক শেখ যাত্রাপুর বাজারে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়। আমরা শুধু মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, এটাই আমাদের অপরাধ। এখন আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার ও নিরাপত্তা দাবি করছি।"
ছোটর স্ত্রী ফাতেমা খানম হীরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ার কারণেই আমাদের দোকান ও বাড়িতে হামলা হয়েছে। আমার বাড়ি থেকে প্রায় দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লাখ টাকা তারা নিয়ে গেছে।" তিনি আরও জানান, হামলার সময় তাদের নারী ও শিশুরা ভয়ে চিৎকার করলেও প্রতিবেশীরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে এগিয়ে আসেনি। প্রাণের ভয়ে তারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে যাত্রাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফরিদ হাওলাদার বলেন, "হোসাইন কবির ছোট মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করার কারণেই হাফিজ ও তার লোকজন এই ন্যক্কারজনক হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। হাফিজ, তার ছেলে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকাবাসী হিসেবে আমরা এই মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে চাই, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর চড়াও হয় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।"
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাত্রাপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদকের রমরমা ব্যবসা চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না, যার ফলে মাদকচক্র দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এই অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত হাফিজ শেখের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদ উল হাসান বলেন, "লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।"
ডিবিসি/জেআরওয়াই