বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের তীব্র প্রতিবাদে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি পাঁচ দিনব্যাপী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিন দিনের হরতাল ও অবরোধ।
শনিবার (৬ই সেপ্টেম্বর) বাগেরহাট শহরের ধানসিঁড়ি মিলনায়তনে আয়োজিত এক জরুরি সভা থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ৭ই সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ৮ই সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস হরতাল, অবরোধ এবং নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর ৯ই সেপ্টেম্বর আবারও বিক্ষোভ মিছিল এবং সর্বশেষ ১০ই ও ১১ই সেপ্টেম্বর জেলায় টানা হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কমিটির কো-কনভেনর এমএ সালাম, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মাওলানা মশিউর রহমান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস আলী এবং যুব বিভাগের প্রধান মনজুরুল হক রাহাতসহ বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্যও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দীপু এবং জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বিদ্যমান ছিল। গত ৩০শে জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব দিলে জেলাজুড়ে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শুনানিতে স্থানীয় নেতারা অংশগ্রহণ করলেও, সব আপত্তি উপেক্ষা করে গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর ইসি আসন সংখ্যা তিনটি নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এর আগেও সর্বদলীয় কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল, জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান এবং ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছিল।
গত ২৪শে আগস্ট এই দাবিতে ঢাকা-খুলনা, খুলনা-পিরোজপুর এবং খুলনা-মোংলা মহাসড়কসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সব সড়কে অবরোধ কর্মসূচিও পালিত হয়, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
ডিবিসি/এএমটি