পিঠা বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে নগরায়ণের প্রভাবে আজ তা অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। অথচ এক সময় বাঙালির যেকোন উৎসব আনন্দে মিশে থাকতো রকমারি পিঠা। যা অনেকটাই হারাতে বসেছে। বাঙালির এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ভোলায় পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভোলা সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ পিঠা উৎসব।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্র্রুয়ারি) সকাল থেকে কলেজ প্রশাসন এ উৎসবের আয়োজন করে। এতে কলেজের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিঠা তৈরি করে স্টল সাজিয়ে অংশগ্রহণ করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজ ক্যাম্পাসের চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ। স্টলে স্টলে সারি সারি পিঠা। কেউ বানিয়েছেন নবাবি সেমাই, কেউ বানিয়েছেন হৃদয় হরন, অবার কেউ তৈরি করেছেন বাহারি গোলাপ,বউ পিঠা, পুলি পিঠা ও চন্দ্র পুলিসহ নানা নামের ও রঙয়ের মুখরোচক পিঠা। এমন বাহারি নামের পিঠার সমারোহ দেখা গেছে, ভোলা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের ছায়াবিথী চত্বর জুড়ে। সেখানে পিঠা উৎসবে বসছে হরেক রকমের পিঠার মেলা। শিক্ষার্থীদের তৈরিকৃত এসব পিঠা দেখতে স্টলে স্টলে ভিড় নেমেছ দর্শনার্থীদের। উৎসব প্রাঙ্গণে নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করছে।
এ বিষয়ে কথা হয় মেলায় আসা দর্শনার্থী লুবনা, বিথী ও সুরমার সঙ্গে। তারা বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। এ ধরনের পিঠা উৎসবের আয়োজন প্রতিনিয়ত করা উচিত। তবেই বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
মেলার এক একটি স্টলে অর্ধশতাধিক আইটেমের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছে কলেজ শিক্ষার্থীরা। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের মুখোরোচক এ পিঠা তৈরি করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহানাজ আক্তার জানান, তার স্টলে ৫০ আইটেমের বেশি পিঠা রয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলো আকর্ষণীয় নামের পিঠা আছে। এ পিঠা তৈরিতে ওই বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী অথৈই জানান, তাদের স্টলে ৪০ আইটেমের পিঠা রয়েছে। এর মধ্যে চিংড়ি পিঠা, মুরালী, সতির মোচড়, চিকেন ঝাল পিঠা, কাবাবী সেমাই, পাকন পিঠা, ঝিনুক পিঠা ও ডিমের জর্দাসহ ব্যতিক্রমী নামের পিঠা রয়েছে।
দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসবে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ২০টি স্টল অংশগ্রহণ করে।