বাজারে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় সাদা ও বাদামী রঙের ডিম। ডিমের রঙের ক্ষেত্রেও অনেকের পছন্দ থাকে। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, বাদামী ডিম স্বাস্থ্যকর বা বেশি প্রাকৃতিক। অবার কেউ কেউ মনে করে সাদা ডিম বেশি ভালো। বিবাহিত কিংবা ব্যাচেলর। খাবারে ডিমের বিকল্প শুধুই ডিম। এর সঙ্গে তুলনা চলে না মাছ কিংবা মাংসের। দাম উঠানামা করলেও এর পুষ্টি কিন্তু উঠানামা করে না। তবে ডিম নিয়ে প্রায়ই যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তা হল, সাদা না কি বাদামী খোসার ডিম, কোনটি খাওয়া বেশি উপকারী?
সাদা হোক কিংবা বাদামী, ডিমের উপকারিতা জানলে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। ওজন কমানো থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, ডিমের কোনো বিকল্প নেই। শরীরের নানা সমস্যার সমাধানে ডিম অত্যন্ত উপকারী। অনেকেই ভাবেন, বাদামী ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি, সাদা ডিমে কম। কেউ বা আবার ভাবেন তার উল্টো। বাজারে সাদা ডিমের তুলনায় বাদামি ডিমের দাম কিন্তু একটু বেশিই রাখা হয়।
বিভিন্ন রঙের হতে পারে মুরগির ডিম। তবে বাদামি আর সাদা ডিমটাই বেশি পাওয়া যায়। দেশি মুরগির ডিম হয় সাদা আর ফার্মের মুরগির রং হয় বাদামি। আবার কিছু কিছু বিদেশি জাত আছে যাদের রং হয় হালকা সবুজ বা নীল। সাধারণত পোলট্রির ডিম হয় সাদা রঙের। এই মুরগির সাধারণত সাদা লোম থাকে। অপরদিকে অনেক মুরগির রং হয় বাদমি। তাদের ডিমের রংও হয়ে থাকে বাদামি। এ ক্ষেত্রে সাদা পোলট্রি বড় করা ও প্রতিপালন করা অনেকটাই সোজা ও বাজেটসুলভ। তাই এই মুরগির ডিমই আপনি বাজারে বেশি পাবেন।
পুষ্টিবিদরা মনে করেন, সাদা ডিমের তুলনায় বাদামি রঙের ডিমে বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাদামি ডিমে প্রোটিন, কোলেস্টেরল এবং ক্যালরির ভারসাম্য সাদা ডিমের তুলনায় অনেকটাই ভালো।
বাদামি ডিমের খোসার তুলনায় সাদা ডিমের খোসা অনেকটাই পাতলা হয়ে থাকে। যার কারণে সাদা ডিম স্বাভাবিক তাপমাত্রা কিংবা ফ্রিজে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। তাই একটু বেশি দাম হলেও সাদা ডিমের পরিবর্তে বেছে নিন বাদামি রঙের ডিমকে। ডিমের খোসার রং সাদা না বাদামী, তা নির্ভর করে মুরগির প্রজাতির ওপর। এছাড়া, মুরগির ডায়েট, স্ট্রেস লেভেল এবং পরিবেশগত কারণেও ডিমের খোসার রং পরিবর্তন হতে পারে।
তবে, বাদামী এবং সাদা উভয় ডিমই উচ্চ মানের প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ডি, বি ১২, এ, এবং ই, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে।
কিছু কিছু কারণ ডিমের পুষ্টি উপাদানকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন দেশি ও ফার্মের মুরগির ডিমে পার্থক্য থাকতে পারে। যে মুরগি সূর্যের আলোতে ঘুরে বেড়ায় সেইসব মুরগির ডিমে ভিটামিন ডি বেশি পাবেন। আবার মুরগি যে ধরনের খাবার খায় তা ডিমের পুষ্টি উপাদানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
আবার মুরগিকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ালে, ডিমে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকবে। মুরগি যখন ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ ফিড খায় তখন ভিটামিন ডি একটু বেশি থাকে। অর্থাৎ, ডিমের খোসার উপর কোন পুষ্টিগুণ নির্ভর করে না।
সাদা এবং বাদামী ডিমের মধ্যে কোন পুষ্টিগত পার্থক্য আছে কিনা তা জানার জন্য বেশ কিছু গবেষণাও করা হয়েছে। দেখা গেছে, খোসার রঙ ডিমের গুণমান বা পুষ্টির ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। যে পার্থক্যটি মূলত পাওয়া যায় তা হল ডিমের খোসার রঙ।