রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাবার সিন্দুক ভেঙে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা চুরি করে নিজের পছন্দে বিয়ে করা স্বামীর হাতে তুলে দিয়েছেন মিনা হামিদ নামে এক তরুণী। টাকা চুরির ঘটনায় মামলার চার দিনের মাথায় ওই তরুণী ও তার স্বামী সাকিবুল হাসানকে আটক করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় চুরির ৯০ লাখ টাকা।
জানা যায়, পেশায় ঠিকাদার আব্দুল হামিদ ওরফে বাবুল স্ত্রী–সন্তান নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে থাকেন। ঈদুল আজহার দু-দিন আগে সপরিবার তিনি ভোলায় গ্রামের বাড়িতে যান। ঈদ উদ্যাপন শেষে গত ২০ জুন ঢাকার বাসায় ফেরেন। ঢাকায় ফেরার ১১ দিনের মাথায় তিনি বাসায় টাকা রাখার সিন্দুক খুলে দেখতে পান, তার ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা নেই।
আব্দুল হামিদ বাসায় সবাইকে টাকার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার কথা কেউ-ই স্বীকার করেননি। পরে হামিদ ৪ জুলাই মেয়ে মিনাকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে চুরির মামলা করেন।
মামলার পরে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের বাসায় যান। সিন্দুক না ভেঙে টাকা চুরির সঙ্গে ঘরের লোকজন জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। বাসায় বসবাসকারী প্রত্যেককে কৌশলে টাকা চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
সূত্র জানায়, বাসার সব সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের একমাত্র মেয়ে মিনা হামিদকে তাদের সন্দেহ হয়। টানা চার দিন বাসায় গিয়ে পুলিশ নানা কৌশলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে মিনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, তিনি সিন্দুকের তালা খুলে টাকা চুরি করেছেন। সেই টাকা তিনি স্বামী সাকিবুল হাসানের কাছে দিয়েছেন। তার তথ্যমতে সাকিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান বলেন, মিনা হামিদ বার-অ্যাট ল’ পড়ছেন। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত বছর রাজধানীর তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস সাকিবুল হাসানকে বিয়ে করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিনা বলেন, তাদের বিয়ে পরিবার মানবে না। এ কারণে বাবার সিন্দুক থেকে টাকা চুরি করে নিজের পছন্দে বিয়ে করা স্বামী সাকিবুল হাসানের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল, বাসা থেকে কাউকে না বলে সাকিবুলের সঙ্গে সংসার শুরু করবেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, ব্যবসায়ী হামিদের টাকা চুরির ঘটনায় জড়িত তার একমাত্র মেয়ে মিনা হামিদ ও তার স্বামী সাকিবুল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। মিনা হামিদ ও সাকিবুল হাসান বর্তমানে কারাগারে আছেন।
ডিবিসি/ এনএম