বাংলাদেশ, জাতীয়

বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকে ঐকমত্য ১০ বিষয়ে

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২৮শে আগস্ট ২০২৫ ০৭:২১:৫৪ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের চার দিনব্যাপী সম্মেলন শেষ হয়েছে। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা, নির্যাতন ও আক্রমণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাসহ মোট ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮শে আগস্ট) ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫৬তম এই সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। 
 

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এবং বিএসএফ মহাপরিচালক দালজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে।

 

বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একইভাবে ভারতীয় প্রতিনিধিদলেও তাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

 

সম্মেলনে সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যা ও আহত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাত্রিকালীন টহল জোরদার করে সীমান্ত হত্যার পুনরাবৃত্তি রোধের প্রতিশ্রুতি দেন। 

 

অবৈধভাবে ভারতীয় নাগরিক ও বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইনের বিষয়েও উদ্বেগ জানায় বিজিবি। এর উত্তরে বিএসএফ মহাপরিচালক পারস্পরিক সম্মত প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দেন।

 

আলোচনায় ফেনীর মুহুরীর চর এলাকায় স্থায়ী সীমান্ত পিলার নির্মাণ এবং ইছামতি, কালিন্দীসহ কয়েকটি নদীর সীমান্ত রেখা নির্ধারণের কাজ দ্রুত শেষ করার ওপর জোর দেয় বাংলাদেশ। এছাড়া, আকাশসীমা লঙ্ঘন না করা এবং সীমান্তে যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার রোধে উভয় দেশের গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য প্রদানে উৎসাহিত করার বিষয়েও দুই বাহিনী একমত হয়।

 

যে ১০টি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

 

১.সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাদক, অস্ত্র, বিস্ফোরক ও স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধ।

 

২.সীমান্তবর্তী জনগণকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে উৎসাহিত করা এবং চোরাচালান ও মানবপাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।

 

৩.শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখা এবং চলমান কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা।

 

৪.যৌথ নদী কমিশন অনুমোদিত নদীর তীররক্ষা কাজ সহজতর করা।

 

৫.‘কানেক্টেড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় দহগ্রামকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সংযুক্ত করার কাজ দ্রুত শেষ করা।

 

৬.আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ এবং তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে তাদের দমন করা।

 

উভয় মহাপরিচালক সম্মেলনের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

ডিবিসি/এএমটি

আরও পড়ুন