বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিনিয়োগ ও শিল্প উন্নয়ন ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল করতে ছয়টি সরকারি সংস্থাকে একীভূত করে একটি নতুন জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। লক্ষ্য-বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সমন্বিত, দক্ষ ও ডিজিটাল সেবা কাঠামো প্রতিষ্ঠা।
তবে প্রস্তাবিত কাঠামো থেকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)-কে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা উদ্বেগজনক। বিসিককে অন্তর্ভুক্ত না করলে এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য-গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন-পূর্ণতা পাবে না।
একীভূত হতে যাওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে BIDA, BEZA, BEPZA, PPPA, BHTPA এবং বিসিক। এদের একত্রে “জাতীয় শিল্প ও বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ (NIDA)” হিসেবে গঠন করা হলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা পর্যায়ে সেবাপ্রাপ্তি সহজ, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল হবে।
বিসিককে অন্তর্ভুক্ত করলে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রশিক্ষণ, প্লট বরাদ্দ, লাইসেন্স, ট্রেড অনুমোদন, ইউটিলিটি সংযোগ, ঋণ সংযোগসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়া সম্ভব হবে। আলাদা দপ্তরে ছুটোছুটি বা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা, গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তারা, যারা বিসিকের সেবা ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল, তারা আরও সহজে রাষ্ট্রীয় সুবিধার আওতায় আসবে।
একীভূত কাঠামো চালু হলে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়, ডেটা শেয়ারিং, নীতির বাস্তবায়ন এবং পরিকল্পনায় বাস্তবতা আসবে। এতে বিনিয়োগ বাড়বে, শিল্প বিকেন্দ্রীকরণ হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং রপ্তানি সক্ষমতা বাড়বে। SME খাত যা দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশ অবদান রাখে, আরও শক্তিশালী হবে।
বিসিককে একীভূত কাঠামোতে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
নতুন গঠিত কর্তৃপক্ষে বিসিককে "SME ও গ্রাসরুট শিল্প উন্নয়ন" শাখা হিসেবে সংযুক্ত করা
বিসিক প্রদত্ত One Stop Service (OSS)- সেবাকে বিড়া বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সেবার সাথে অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিত করা
আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে বিসিককে যুগোপযোগী ও উদ্যোক্তাবান্ধব করা
জেলা পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া
যেখানে বড় শিল্প এগিয়ে যায়, সেখানেই ক্ষুদ্ররা পড়ে থাকে- এই বৈষম্য দূর করতে হলে বিসিককে বাদ দেওয়া নয় বরং সম্পৃক্ত করাটাই হবে বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
ডিবিসি/ এইচএপি