মতামত

বিপ্লব, প্রেম ও প্রকৃতির কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ

সাহিত্য ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ১১ই জুলাই ২০২৫ ০৮:১৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বায়ান্ন'র ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী গণঅভ্যুত্থান- প্রতিটি বিপ্লবী পথপরিক্রমায় যাঁর কবিতা মুক্তিকামী মানুষকে জুগিয়েছে প্রেরণা, তিনি সবুজের কবি আল মাহমুদ। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম এই প্রধান কবির ৯০তম জন্মদিন আজ শুক্রবার (১১ই জুলাই)। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার এই কবি ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

মীর আব্দুস শুকুর আল মাহমুদ, যিনি আল মাহমুদ নামেই সমধিক পরিচিত, তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে বাংলা কবিতায় তিনি এক নতুন ধারার সূচনা করেন। তাঁর কবিতায় লোকজ ঐতিহ্য, গ্রামীণ জীবন এবং একাত্ম হয়ে উঠেছে। 'লোক লোকান্তর' (১৯৬৩), 'কালের কলস' (১৯৬৬) এবং অবিস্মরণীয় 'সোনালী কাবিন' (১৯৭৩)-এর মতো কাব্যগ্রন্থগুলো তাঁকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারিতে স্থান করে দিয়েছে।

 

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে দৈনিক 'গণকণ্ঠ' পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে সরকারের বিরুদ্ধে লেখার জন্য তাঁকে কারাবরণও করতে হয়। কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং একুশে পদকসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কিংবদন্তী কবি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

 

কবির ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভক্ত-অনুরাগীরা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে 'কালের কলস' ও 'কালের ধ্বনি'র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে আলোচনা, স্মরণ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। এতে দেশের শিল্প-সাহিত্যাঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া, সকালে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ 'আমাদের আল মাহমুদ' শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে। আগামীকাল ১২ জুলাই, শনিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪টায় কবিতা, স্মৃতিচারণ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।

 

এদিকে, কবির ভক্তরা রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর জন্মবার্ষিকী পালনের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, "বিগত স্বৈরাচারী সময়ে আল মাহমুদকে তুমুল অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে আল মাহমুদের অনেক কবিতা ছাত্র-জনতাকে দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে।" তাঁরা আরও বলেন, "তিনি বাংলা ভাষার ফসলি জমিনকে জাদুকরী দক্ষতায় উর্বর করে গেছেন।" জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কবিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ এবং তাঁর লেখা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তাঁরা। সাহিত্য গবেষণার জন্য একটি 'কবি আল মাহমুদ ইনস্টিটিউট' প্রতিষ্ঠারও দাবি জানানো হয়েছে।

 

ডিবিসি/এএনটি

আরও পড়ুন