বৈশ্বিক ক্রীড়াঙ্গনে ডোপপাপের লজ্জাজনক এক ‘হ্যাটট্রিক’ করল ভারত। টানা তৃতীয় বছরের মতো ডোপিংয়ের দায়ে বিশ্ব তালিকার শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে দেশটির নাম। ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সির (ওয়াডা) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে সাফল্য পাওয়ার এই প্রবণতা ভারতের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক বড় ধরনের নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ই ডিসেম্বর) রাতে প্রকাশিত ওয়াডার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে ভারতের ন্যাশনাল অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি (নাডা) মোট ৭ হাজার ১১৩টি মূত্র ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। এর মধ্যে ২৬০টি নমুনায় নিষিদ্ধ পদার্থের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই বিপুল সংখ্যক অ্যাথলেটের ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়াকে ভারতের জন্য এক বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তালিকায় ভারতের পরেই অবস্থান করছে ফ্রান্স, যেখানে ৯১টি পজিটিভ কেস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ইতালি ৮৫টি কেস নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ডোপিংয়ের এই তালিকায় এর পরে রয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র, যাদের উভয়েরই ৭৬টি করে পজিটিভ কেস পাওয়া গেছে। এছাড়া জার্মানি ও চীনের অবস্থান যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম।
অ্যাথলেটিক্স, ভারোত্তোলন এবং কুস্তি—এই তিন ইভেন্টেই ভারতে ডোপিংয়ের হার সবচেয়ে বেশি। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অ্যাথলেটিক্সে ৭৬টি, ভারোত্তোলনে ৪৩টি এবং কুস্তিতে ২৯টি ডোপিং কেস ধরা পড়েছে। এমনকি প্যারিস অলিম্পিকের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা কুস্তিগীর রীতিকা হুডাও ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হয়েছেন। প্রতিবেদনে আরও একটি উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে; এ মাসের শুরুতে ভারতের ইউনিভার্সিটি গেমসে অ্যান্টি-ডোপিং কর্মকর্তাদের ভয়ে অনেক অ্যাথলেট মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যান, ফলে কিছু ইভেন্টে মাত্র একজন করে প্রতিযোগী অবশিষ্ট ছিলেন।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে ভারতের ন্যাশনাল অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি (নাডা)। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, তারা ভারতে ডোপিংবিরোধী কাঠামো আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী করেছে। শুধুমাত্র পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোই নয়, অ্যাথলেটদের সচেতন করার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নাডার তথ্যমতে, চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা ৭ হাজার ৬৮টি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যার মধ্যে পজিটিভ কেস পাওয়া গেছে ১১০টি।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
ডিবিসি/এফএইচআর