বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে নির্মমভাবে হত্যা করা আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটে চান্স পেয়েছেন। এবার বুয়েট প্রাঙ্গণে পা রাখতে যাচ্ছে তারই ছোট ভাই।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০শে জুন) রাতে বুয়েটের ২০২১-২২ ব্যাচের স্নাতক ভর্তির ফল প্রকাশ হয়েছে। সেখানে প্রকাশিত রেজাল্টে আবরার ফাইয়াজ ৪৫০তম হয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
ফলাফল নিয়ে খুশি আবরার ফাইয়াজ ও তার পরিবার। তবে, নিরাপত্তা নিয়ে এখনও সন্দিহান তারা। কারণ, এই প্রাঙ্গণেই ভাই হারিয়েছেন ফাইয়াজ, সন্তান হারিয়েছেন বরকত উল্লাহ-রোকেয়া খাতুন দম্পতি। তাই ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
এ বিষয়ে আবরার ফাইয়াজ বলেন, রাতে বুয়েটের ফল পেলাম। ফল পেয়ে আমি খুশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল এখনও বাকি। আবার আইইউটিতে ভর্তি আছি। এখন পর্যন্ত কোথায় পড়ব সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে ইচ্ছা আছে বুয়েটে ভর্তি হওয়ার। তারপরও পরিবারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।
এ বিষয়ে আবরার ফাইয়াজের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ফাইয়াজ এখন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত। তাকে বুয়েটে ভর্তি করাব কিনা তা নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। বুয়েটে এখনও র্যাগিং আছে কিনা, নিরাপত্তা কতটুকু পাব এসব দেখতে হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। আর ওর ইচ্ছাকেও প্রাধান্য দেবো।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ই নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
গত বছরের ৮ই ডিসেম্বর এই মামলায় রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। তাদের মধ্যে মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক রয়েছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার।