বাংলাদেশ, জাতীয়

বেগম খালেদা জিয়ার কবরের স্থান পরিদর্শনে জিয়া উদ্যানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

৩ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৩০শে ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটের দিকে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে তাঁর কবরের স্থান পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় তিনি কবর খনন কার্যক্রম ও সার্বিক প্রস্তুতির খোঁজখবর নেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ফজরের নামাজের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

 

বেগম খালেদা জিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে হলেও তিনি বেড়ে উঠেছেন দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়া এলাকায়। তার বাবা ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার। শিক্ষাজীবনে তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৬০ সালে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ফাস্ট লেডি হিসেবে তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

 

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর দলের চরম সংকটময় মুহূর্তে গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে আসেন খালেদা জিয়া। ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আপসহীন নেতৃত্বের জন্য তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সেই দীর্ঘ সংগ্রামে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তাঁকে সাতবার আটক ও গৃহবন্দী হতে হয়েছিল।

 

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শাসনামলে শিক্ষা খাতে বিশেষ করে নারী শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করেন এবং সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩০ বছর করেন। ১৯৯৬ সালে বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের মাধ্যমে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সব কটি আসনে জয়লাভের অনন্য রেকর্ড রয়েছে তাঁর।

 

২০১৮ সালে একটি মামলার রায়ে তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বিবেচিত হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি সব মামলা থেকে খালাস পান। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এই নেত্রীকে ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি স্টেট সিনেট ‘গণতন্ত্রের যোদ্ধা’ খেতাবে ভূষিত করেছিল।

 

ডিবিসি/পিআরএএন

আরও পড়ুন