অবৈধ পথে সীমান্ত পার করা হতো ভারতে পাচার হওয়া বাংলাদেশি নারীদের। অরক্ষিত এলাকা দিয়ে সীমান্ত পার করে রাখা হতো পাশের দেশের নিকটবর্তী সেফ হাউজে।
সুবিধাজনক সময়ে কলকাতা, তারপর বেঙ্গালুরু। জোর করে মাদকাসক্ত করে ব্ল্যাকমেইল এবং চলতো অমানবিক নির্যাতন। আর গত পাঁচ বছরে এই কাজের নেতৃত্ব দিতো 'বস রাফি'।
ভারতের শুধু বেঙ্গালুরুতেই ৭ থেকে ৮শ বাংলাদেশি তরুণী রয়েছেন যাদের দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে অবৈধ কাজ করানো হয়। প্রতিবাদ বা পালাতে চাইলেই শুরু হয় নির্যাতন।
ভারত থেকে ফিরে আসা এক ভুক্তভোগী জানান, সেইফ হাউজগুলো থেকে তাদের ১০-১৫ দিনের জন্য বিভিন্ন খদ্দেরের কাছে সরবরাহ করা হতো। চারদিকে ছাড়ানো থাকতো চক্রটির লোকজন।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন,'অনেক মার খেয়েছি। কিছু বললেই মার খেতে হয়েছে তাই বাধ্য হয়েই ওখানে থেকেছি। তাদের কথামতো কাজ করেছি।
সম্প্রতি ভারতে এক বাংলাদেশি নারী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রাফির বিষয়ে এই ভুক্তভোগী বলেন তার বোনকেও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল রাফি। গ্রেপ্তার হওয়ার পর জানতে পারেন তিনি।
বলেন, শুধু রাফির নেতৃত্বেই সেখানে আধার কার্ডসহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারী আরও বলেন,'ওখানে যদি আমাদের কেউ মেরেও ফেলতো তাও কেউ দেখার ছিলো না। বাধ্য হয়েই আমাদের ওখানে থেকে কাজ করতে হয়েছে। আমি টানা তিন বছর ওখানে ছিলাম।'
এর কাছে গ্রেপ্তার হওয়া ম্যাডাম শাহিদার দুই মেয়েই ভারতে রাফীর অধীনে কাজ করতো, যার জন্য রাফিই বাংলাদেশে টাকা পাঠাতো, বললেন ম্যাডাম শাহিদার আরেক মেয়ে। ভুক্তভোগী ওই নারী আরও বলেন,'আমরা ওখানে আধার কার্ড, ভোটার আইডিসহ সব কার্ড আছে। আমি টাকা দিয়ে বানিয়েছিলাম।'
প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ভারতে নারী পাচার চক্রের হোতা ঝিনাইদহের আশরাফুল ইসলাম ওরফে বস রাফিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।