বেলুন ফোলাতে হিলিয়াম গ্যাসের পরিবর্তে সস্তায় পাওয়া দাহ্য হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করছেন বিক্রেতারা। সেই সাথে সিলিন্ডারও তৈরি করছেন নিজেদের মতো। যা শুধু ঝুঁকিপূর্ণ নয়, বিপদজ্জনকও বটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিলিন্ডারগুলো এক-একটি জীবন্ত বোমা। এসব দেখার দায়িত্ব যাদের, বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে লোকবল সংকট আছে, এই সমস্যা সমাধানে পুলিশকেও এগিয়ে আসতে হবে।
বেলুন, মানে গ্যাস বেলুন। এদিক সেদিক তাকালেই চোখে পড়ে। বিশেষ করে শিশুদের স্কুল, পার্কের সামনে অহরহই দেখা যায় বিক্রেতাদের। শিশুদের আবদারে অনেক সময় অভিভাবকরাও কিনে দিতে বাধ্য হন । এখন আবার নতুন ধরনের বেলুন পাওয়া যায়, অ্যালুমিনিয়াম বেলুন। এটাতেও গ্যাস ভরে বিক্রি করা হয়।
কী কিনছেন, কী আছে এতে, শুধুই কি গ্যাস নাকি অন্য কিছু ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন ক্যামিক্যালের প্রক্রিয়াতে একটু এদিক সেদিক হলেই বিস্ফোরণ অনিবার্য।
বুয়েট ডিপার্টমেন্ট অব কেমিক্যালের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, এসব গ্যাস বেলুন ফোলানোর কাজে যেসব সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বিক্রেতারা নিজেদের মত করে তৈরি করে।ফলে এগুলোর কোন স্ট্যান্ডার্ড নেই।এসব সিলিন্ডারে যে গ্যাসই ভরা হোক না কেনো, তাই ঝুঁকিপূর্ণ।
এসব দেখার দায়িত্ব যাদের, বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে, অনেক আগে থেকেই সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন ব্যবহারে করে যেন বেলুন বিক্রি করা না হয় তার জন্য প্রশাসনকে দফায় দফায় চিঠি দেয়া হচ্ছে। কোন কাজ হয়নি।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক সামসুল আলম বলেন, আমাদের তো দেশের সবখানে কোন লোক নেই। আমাদের যথেষ্ট লোকবলের সংকট আছে। আমরা লোকাল প্রশাসনকে কিন্তু আগেই জানিয়ে দিয়েছি এগুলো বিপজ্জনক। যেকোন সময়ই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, আপনারা এগুলো দেখলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
এর আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ২০১৬ সালে বনানীতে ১ জন, ২০১৭ সালে যাত্রাবাড়ী ৪ জন এবং ২০১৯ এ মিরপুরে ১ জন নিহত হয় । ২০১৮তে গ্যাস বেলুন নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে বিস্ফোরণ হওয়ায় ১০ জন স্কুলের ছাত্র আহত হয়। সবশেষ বুধবার মিরপুরের রূপনগরে এইরকম এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণ গেছে সাত শিশুর, হাসপাতালের বিছানায় আছে আরও ১০ জন।