জীবনের ব্যস্ততায় আমাদের ছুটে চলা। চলতে চলতে আমরা কখনো ক্লান্ত হয়ে যাই, একটু দম নিয়ে আবার চলতে শুরু করা। এই ছোটাছুটির মাঝে আমরা ভুলে যাই যে, ব্যস্ততাই সব নয়। যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নিজেকে ভালো রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।
আপনার শরীর বা মনে কষ্ট হলে তা শুধু আপনাকেই ভোগ করতে হবে। তাই সবার আগে নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করুন। বর্তমান ব্যস্ত জীবনে এটি একটু কঠিন, তবে অসম্ভব তো নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ব্যস্ততার মাঝেও সুস্থ থাকার উপায়-
প্রকৃতির কাছাকাছি থাকুন: বিজ্ঞান বলে, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে তা মানসিক চাপ কমায় এবং প্রফুল্লতা বাড়ায়। বাইরে যান। পার্কের ভেতরে হাঁটতে পারেন। সবুজের মধ্যে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস আপনাকে মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখবে। স্ক্রিন কিংবা ডিভাইস থেকে বিরতি নিন। বরং, বাইরের তাজা বাতাসে নিঃশ্বাস নিন।
শখের কাজ করুন: শখের কাজগুলোর জন্য সময় আলাদা করে রাখুন। ব্যস্ত জীবনে এটি আপনার কাছে বিলাসিতা বলে মনে হতে পারে। তবে সামগ্রিক সুস্থতার একটি অত্যাবশ্যক অংশ হলো এমন কিছু করা যা আপনি উপভোগ করেন। শখ নিজেকে প্রকাশ করতে এবং সৃজনশীল হতে সাহায্য করে। এতে দৈনন্দিন জীবনের চাপ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।
মননশীলতার চর্চা করুন: ডিজিটাল গোলমালের মধ্যে মননশীলতা অ্যাপের মাধ্যমে শান্তির মুহূর্ত খুঁজে বের করুন। একটি পাঁচ মিনিটের ধ্যানের সেশন হোক বা শান্ত পরিবেশের শব্দ হোক, এই ডিজিটাল সরঞ্জামগুলো আপনাকে মননশীলতা গড়ে তুলতে এবং কার্যকরভাবে স্ট্রেস পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।
ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন: এই ডিজিটাল বিশ্বে, যেখানে আমাদের জীবনের অনেকখানি জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন ডিভাইস, স্ক্রিনে চোখ রাখলেই কেটে যায় কয়েক ঘণ্টা, সেখানে সন্ধ্যার পরে একটু বিশ্রাম পেলে সেই সময়টুকু হয়তো স্ক্রিনেই পার হয়ে যায়। অনেকে আবার একধাপ এগিয়ে রাত জেগে ফোন বা ল্যাপটপের স্ক্রিনে সময় কাটান। কিন্তু এই বদ অভ্যাস আপনার ঘুম নষ্ট করছে নিয়মিত। সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর ঘুমের জন্য ঘুমের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে সব ধরনের ডিভাইস দূরে সরিয়ে রাখুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান: পুষ্টিকর খাবার তৈরির প্রক্রিয়াটিকে সঠিক রাখতে খাবার পরিকল্পনার অ্যাপগুলোকে কাজে লাগাতে পারেন। এই অ্যাপগুলো আপনাকে কেনাকাটার তালিকা তৈরি করতে, স্বাস্থ্যকর রেসিপির পরামর্শ দিতে এবং এমনকী খাবারের প্রস্তুতিকে স্বয়ংক্রিয় করতে সাহায্য করবে। এমনকী সবচেয়ে ব্যস্ত দিনগুলোতেও আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবেন।
হাইড্রেশন বজায় রাখুন: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করার অভ্যাস ধরে রাখুন। ব্যস্ততায় ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক তাই আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য স্মার্টফোন অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারেন। অনেক অ্যাপ আপনাকে হাইড্রেটেড থাকা নিশ্চিত করতে মনে করিয়ে বার্তা পাঠাবে, সেভাবে সময়মতো পানি পান করলে তা আপনার শরীরকে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখবে।
মেডিকেল রেকর্ড রাখুন: আপনার মেডিকেল রেকর্ডগুলো সংরক্ষণ এবং নজরে রাখার মাধ্যমে সুস্থতার উন্নতি হতে পারে। আপনি স্বাস্থ্য ট্র্যাক করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি অ্যাপ এবং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে পূর্বের অসুস্থতা, অ্যালার্জি, প্রেসক্রিপশন এবং টিকাদানের বিষয়গুলো নজরে রাখতে পারেন। ডিজিটাল বিশ্বে ডিজিটালভাবে স্বাস্থ্য রেকর্ড বজায় রাখা সুস্থতার জন্য একটি সক্রিয় পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এই ডিজিটাল রিপোজিটরিটি শুধুমাত্র আপনার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে না, বরং সময়মতো প্রয়োজনীয় টিকা প্রদানও নিশ্চিত করবে।
ডিবিসি/এসএসএস