চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ভাইয়ের সঙ্গে জোর করে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া বোনকে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মা ও ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
ধর্মীয় ও আইনগত নির্দেশনা উপেক্ষা করে এ বিয়ে রেজিস্ট্রি করার দায়ে নিকাহ রেজিস্টারকেও আটক করেছে পুলিশ। গতকাল ওই ছাত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে অভিযোগ করলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা মাদ্রাসাপাড়ার আজিজুল হকের ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী। গত প্রায় দু’মাস পূর্বে গোপনে তাকে ভাই সোহেল রানার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের মা লিলি খাতুন জোর করে এই বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ে পড়িয়েছেন কাজী ওমর ফারুক। ওই শিক্ষার্থী ও সোহেল একই মায়ের সন্তান ও একই পরিবারে বড় হয়েছে।
গতকাল বুধবার সুমি খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট উপস্থিত হয়ে উপরোক্ত অভিযোগ তোলে। অভিযোগ শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশকে অভিযোগটি গ্রহণ করতে বলেন।
পুলিশ অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত লিলি খাতুন, ছেলে সোহেল ও কাজী ওমর ফারুককে আটক করেছে।
জানা গেছে, লিলি খাতুনের প্রথম বিয়ে হয় কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া গ্রামের ফজলুল হকের সাথে। সেখানে সোহেলের জন্ম হয়। ফজলুল হকের আকস্মিক মৃত্যু হলে লিলি খাতুন আলমডাঙ্গার আজিজুল হককে বিয়ে করেন। এ সংসারে সুমির জন্ম হয়। ছোট শিশুপুত্র সোহেলকে সঙ্গে নিয়েই লিলি খাতুন আজিজুল হকের সংসারে আসেন।
তাদের নামও ভাইবোন হিসেবে মিল করে রাখা হয়। তারা একই সাথে ভাইবোন সম্পর্ক বজায় রেখেই বড় হয়েছে। সোহেলের বয়স ২৪ বছর। সুমি এ বছর ক্লাস সেভেনে পড়ে। এরই মাঝে মা লিলি খাতুন মেয়ে সুমির সাথে সোহেলকে বিয়ে করতে রাজি করায়। সোহেল রাজি হলে গত প্রায় দু’মাস পূর্বে লিলি খাতুন তাদেরকে গোপনে বিয়ে দিয়ে দেন। ধর্মীয় অনুশাসন উপেক্ষা করেই বিয়েতে অনিচ্ছুক সুমিকে জোর করেই বিয়ে দেন।
অভিযুক্ত লিলি খাতুন জানান, ‘সোহেলের কিছু নেই। সে কি করে চলবে? এই ভেবে বিয়ে দিয়েছি।’ অভিযুক্ত কাজী ওমর ফারুক বলেন, ‘লিলি খাতুনের ভাই আমাকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল।’ এদিকে ধর্মীয় বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এ বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।