ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপালে একটি নবনির্মিত রেল ওভারব্রিজের (ROB) নকশায় মারাত্মক ক্রুটি থাকার অভিযোগে শনিবার রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের (PWD) সাতজন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে দুজন মুখ্য বাস্তুকারও রয়েছেন। এই ঘটনায় নির্মাণকারী সংস্থা এবং ডিজাইন কনসালট্যান্টকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপাল শহরের ঐশবাগ এলাকায় তৈরি হওয়া এই নতুন ওভারব্রিজটির নকশায় একটি অস্বাভাবিক ৯০-ডিগ্রি বাঁক থাকায় তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং নেটিজেনরা এই ধরনের নকশার কার্যকারিতা এবং যানবাহন চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব শনিবার (২৮শে জুন) সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যম 'এক্স'-এ একটি পোস্টে জানান, "ঐশবাগ রেল ওভারব্রিজ নির্মাণে গুরুতর গাফিলতির বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি এবং এর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পূর্ত দপ্তরের আটজন ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, দুজন মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারসহ সাতজনকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগ করেন, "নির্মাণকারী সংস্থা এবং ডিজাইন কনসালট্যান্টকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং ওভারব্রিজটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।"
এই ঘটনায় যে দুজন মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁরা হলেন সঞ্জয় খান্ডে এবং জি পি ভার্মা। বাকিরা হলেন ভারপ্রাপ্ত কার্যনির্বাহী বাস্তুকার জাভেদ শাকিল, ভারপ্রাপ্ত সাব-ডিভিশনাল অফিসার রবি শুক্লা, সাব-ইঞ্জিনিয়ার উমাশঙ্কর মিশ্র, সহকারী বাস্তুকার শানুল সাক্সেনা এবং ভারপ্রাপ্ত কার্যনির্বাহী বাস্তুকার শাবানা রাজ্জাক।
সমালোচনার মুখে পড়া এই ওভারব্রিজটি প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য ছিল প্রায় তিন লক্ষ মানুষের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা। পূর্ত দপ্তরের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন যে জমির স্বল্পতা এবং কাছাকাছি মেট্রো স্টেশনের উপস্থিতির কারণে এই ধরনের নকশা করা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে জনরোষ এবং সমালোচনার মুখে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
ডিবিসি/এমইউএ