পুলিশের মতোই উর্দি, লোগো এবং পরিচয়পত্র; দপ্তরের সামনে ঝুলছে সরকারি সংস্থার মতো দেখতে সাইনবোর্ড। ভারতের দিল্লির কাছেই নয়ডায় রীতিমতো দপ্তর খুলে চলছিল আস্ত এক নকল পুলিশ স্টেশন। আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারিত্বের দাবি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয়ের জাল সার্টিফিকেট দেখিয়ে সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে টাকা আদায়ই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। অবশেষে এই অভিনব প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করেছে দেশটির গৌতম বুদ্ধ নগর পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চক্রের মূল হোতা-সহ ছয়জনকে, যারা প্রত্যেকেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
রবিবার (১০ই আগস্ট) সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নয়ডার সেক্টর ৭০-এর একটি বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখানেই 'ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো' নামে এই ভুয়া সংস্থার দপ্তর খুলে বসেছিল অভিযুক্তরা। তাদের জালিয়াতির কারবার এতটাই নিখুঁত ছিল যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে আসল-নকলের ফারাক বোঝা প্রায় অসম্ভব ছিল।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই চক্রটি নিজেদের প্রভাবশালী প্রমাণ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের নামে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করেছিল। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতে ইন্টারপোল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন এমনকি যুক্তরাজ্যে তাদের শাখা থাকার মতো চোখ ধাঁধানো দাবি করত তারা। অনুদান সংগ্রহের জন্য তৈরি করা হয়েছিল একটি ওয়েবসাইটও। মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তাদের কাছে ছিল একাধিক প্রেস ও মানবাধিকার কর্মীর নকল পরিচয়পত্র এবং সরকারি দেখতে রাবার স্ট্যাম্প।
সেন্ট্রাল নয়ডার ডিসিপি শক্তি মোহন অবস্থি জানান, "প্রায় ১০ দিন ধরে তাদের কার্যক্রম চলছিল। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল নথি, পরিচয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, এটিএম কার্ড, মোবাইল ফোন এবং নগদ ৪২ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।"
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
ডিবিসি/এমএআর