ভারতের সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিতে শঙ্কিত নন ব্যবসায়ী এমনকি অর্থনীতি বিশ্লেষকরাও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্যের দাম সক্ষমতায় ভারতের বাজারে টেকা কঠিন। বরং ভারতীয় কাঁচামালে তৈরি পণ্য ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে বিক্রি করা বাংলাদেশের জন্য বেশি লাভজনক। আর তাই বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে স্বস্তায় বেশি বেশি কাঁচামাল আমদানির সুযোগ সৃষ্টির তাগিদ তাদের।
ভৌগোলিক ভাবে তিন পাশ জুড়েই অবস্থান আর নানা শিল্পপণ্যের কাঁচামালের উৎস হওয়ায় ভারত বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ।
দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আর তার বিপরীতে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথাগত বাজারের বাইরে ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বাজার অনুসন্ধানের অনীহায় রপ্তানি বাড়ছে না।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘কলকাতা, দিল্লী বাদে আরও অনেক শহর আছে, অনেক বড় বাজার আছে। কিন্তু আমাদের রপ্তানিকারকরা সেগুলো দেখছেন না।’
তবে, এক্ষেত্রে ভিন্ন মতও আছে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশ কাঁচামাল আমদানি নির্ভর দেশ হওয়ায় ভারতের সঙ্গে দাম প্রতিযোগিতায় টেকা কঠিন।
ওয়েল গ্রুপের সিইও সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত থেকে সব কাঁচামাল আসে। সেখান থেকে কাঁচামাল এনে আমি একটি কাপড় বানিয়ে, আবার সেটা ভারতের কাছেই বিক্রি করব। আমার খরচ আর ভারতের খরচ যদি সমান হয় বা বেশি হয়, তাহলে কেন আমার কাপড়টা কিনবে মানুষ। এই যে খাদ্যপণ্যগুলোর একটি প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে ময়দা, সেটা হয়ং গম থেকে এবং এটা বেশি আসে ভারত থেকে।’
অর্থনীতি বিশ্লেষকরাও মনে করেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে চিন্তার কিছু নেই। বরং আমদানি পণ্য যত বেশি কাঁচামাল হবে তত বেশি লাভ বাংলাদেশের।
এ অবস্থায় বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে বরং আরও সহজে কম খরচে কিভাবে বেশি বেশি কাঁচামাল আমদানি করা যায় সে কৌশল খোঁজার তাগিদ দিচ্ছেন ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা।