ভারী বৃষ্টির জেরে পানির নিচে তলিয়ে গেছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবকে ‘বিপর্যস্ত রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে উদ্ধারকাজে আর্মি, নেভি ও বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৩টি দল সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
সরকারি রিপোর্ট বলছে, বন্যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাবের সব কয়টি জেলা। ৩০ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩.৪৫ লাখ মানুষ। প্রায় এক হাজার ৪০০ গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করার পাশাপাশি পাঁচ হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নেয়া হয়েছে।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঠানকোট, সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এছাড়া লুধিয়ানায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই লাগাতার বৃষ্টি চলছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ক্ষতির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে গুরুদাসপুর জেলা। এখানে ৩২৪টি গ্রাম ডুবে গেছে, এছাড়া অমৃতসরে ১৩৫টি গ্রাম এবং হোশিয়ারপুরে ১১৯টি গ্রাম ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বার্নালা, বাথিন্ডা, ফিরোজপুর, পাতিয়ালা, এসএএস নগর, সাঙ্গরুর, তরন তারান এবং ফাজিলকা। বন্যায় ১.৪৮ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি ফসল নষ্ট হয়েছে, প্রায় ৩.৭৫ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি ডুবে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রকে চিঠি লিখে ৬০ হাজার কোটি টাকা সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে পঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে বৃহস্পতিবার সেখানে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ফেরার পথে রাজ্যের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করবেন তিনি।
উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার তিনি এক্সে মোদীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, মোদীজি, পঞ্জাব বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতিও বেশ উদ্বেগজনক। আমি অনুরোধ করছি, এই রাজ্যগুলোর জন্য, বিশেষ করে কৃষকদের জন্য, অবিলম্বে একটি বিশেষ ত্রাণ ঘোষণা করার পাশাপাশি, ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের গতি বাড়ানো হোক।
ডিবিসি/ এইচএপি