লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য

ভিটামিন-কে পাবেন যেসব খাবারে

লাইফস্টাইল ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ৩রা ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:০৫:৩৬ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মানবদেহে ভিটামিনের ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে ভিটামিন-কে মানবদেহের জন্য খুবই জরুরি একটি উপকরণ। ভিটামিন-কে সমৃদ্ধ খাবার খেলে হাড়ের গঠন মজবুত ও সুদৃঢ় হয়। এর পাশাপাশি এই ভিটামিন ক্ষতস্থানে দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগজনিত নানা সমস্যা থেকে আপনাকে দূরে রাখে। কোষের ক্ষয় রোধ করে, খেয়াল রাখে ত্বকের, ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিটামিন-কে এসেনশিয়াল ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন। এটি হাড় ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এ ছাড়া এর আরও অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে আমাদের শরীরে। বর্তমানে বাজারে সহজে পাওয়া যায় এমন কিছু সবজির মধ্যে সহজেই এই ভিটামিন পাবেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের তথ্য অনুযায়ী, নারীদের ক্ষেত্রে দৈনিক ১২২ মাইক্রোগ্রাম ও পুরুষের ক্ষেত্রে দৈনিক ১৩৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-কে প্রয়োজন পড়ে। এ পরিমাণ ভিটামিন-কে বাজারে সহজে পাওয়া যায় এমন সবজি থেকেই পাওয়া সম্ভব।

 

শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত শালগম। এটি একপ্রকার রূপান্তরিত মূল এবং মাটির নিচের অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আধা কাপ সেদ্ধ শালগমে ৪২৬ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-কে পাওয়া যায়। এতে রোগ প্রতিরোধী অনেক গুণ আছে। এটি প্রদাহ নাশ করে। এমনকি ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। এটি চুল ও ত্বক ভালো রাখে। রক্তাল্পতা দূর করে। এটি বাজে কোলস্টেরল দূর করতে পারে। শালগম দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর লিউটিন নামক উপাদান হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী। শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। শালগম রক্ত পরিশোধিত করে এবং রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ক্ষুধামান্দ্য দূর করতেও শালগম বেশ উপকারী।

 

ব্রাসেলস স্প্রাউটস একদম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাঁধাকপির মতো হয়। এটি একটি ভিটামিন-কে সমৃদ্ধ খাবার। এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারও। প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে এবং শরীরে শর্করার মাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে এই সবজি।

 

সবুজ রঙের ফুলকপির মতো দেখতে এই সবজির রয়েছে অনেক গুণ। অনেকে তরকারিতে এই সবজি ব্যবহার করেন। আবার স্বাস্থ্যকর সালাদ তৈরিতেও ব্রকোলি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। ভিটামিন-কে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ ব্রকোলি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। এর পাশাপাশি হজমশক্তি ভালো করে এবং ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা কমায়।

 

৬ আউন্স গাজরের রসে ২৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে থাকে। গবেষকেরা বলেন, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গাজরের রস খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। গাজরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপকারটি তা হলো দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া। এ ছাড়াও আছে আরও অনেক স্বাস্থ্যগত সুবিধা। শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজরের জুসে ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খনিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

 

প্রতি ছয় আউন্সে ১৯ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-কে পাওয়া যায়। বেদানায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখতে প্রতিদিন এক মগ বেদানার রস খাওয়া যেতে পারে। পুষ্টিবিদ আলেয়া মাওলার তথ্য অনুযায়ী, ফলটা শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও অনন্য। এতে আছে প্রচুর খনিজ। তাই যাদের রক্তশূন্যতা আছে, তাদের জন্য খুব ভালো। এ ছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ ভিটামিন এ, সি, ই প্রভৃতি পুষ্টি উপাদান।

 

পালং শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-কে রয়েছে। পালং শাকের মধ্যে থাকা ভিটামিন কে আমাদের দেহে আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এর ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে। সেই সঙ্গে হাড়ের গঠন সুদৃঢ় এবং মজবুত হয়।

 

সরিষা শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-কে রয়েছে। এতে থাকা ভিটামিন কে ত্বকের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে। এছাড়াও হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন অসুখ থেকে আপনাকে দূরে রাখে। সরিষার শাকের মধ্যে থাকা থিয়ামিন এবং নিয়াসিন উপকরণ ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

 

পাতাকপি, সবুজ রঙের এই সবজি খাওয়ার অনেক গুণ রয়েছে। এই সবজির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-কে রয়েছে। ভিটামিন কে ছাড়াও এই সবজির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। তার ফলে হাড়ের গঠন সুদৃঢ় হয়। একই সঙ্গে কোষের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

 

মাছে ভিটামিন-কে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে। বেকড, গ্রিলড ফিশ খেলে আপনার শরীরে ভিটামিন-কে এর চাহিদা পূরণ হবে। বিভিন্ন বাদামে প্রচুর উপকারিতার মধ্যে অন্যতম হলো এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-কে আছে। তাই ডায়েটে রাখুন কাজুবাদাম, হেজলনাট ও ওয়ালনাট।

আরও পড়ুন