ভুটানের সফররত প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সম্মানে রাজধানীর একটি হোটেলে নৈশভোজের আয়োজন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২২শে নভেম্বর) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন।
সম্পর্কের গভীরতা ও ঐতিহাসিক বন্ধন নৈশভোজে বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ ও ভুটানের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে সংহতি, সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দিকের দেশ, যা আজও এক চিরন্তন সংহতির নিদর্শন।’
তিনি ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ ও ‘চমৎকার মানুষ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘সমগ্র ভুটান বাংলাদেশের চমৎকার বন্ধু।’
গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সহযোগিতা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত পার করছি। প্রতিষ্ঠান পুনর্জীবিত করা এবং উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এই নতুন যাত্রায় আমরা প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’
তিনি আরও জানান, শনিবার বিকেলের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাণিজ্য, জ্বালানি, শিক্ষা ও কানেক্টিভিটি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এ সময় তিনি ভুটানের ‘কার্বন-নেগেটিভ’ সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের জলবায়ু জোট গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তোবগের প্রশংসা ও আগামীর বার্তা উত্তরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন। তিনি ড. ইউনূসের ‘তিন শূন্য’ (শূন্য কার্বন, শূন্য দারিদ্র্য ও শূন্য বেকারত্ব) দর্শনকে ‘মূল্যবান শিক্ষা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তোবগে বলেন, ‘দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আপনি যে বিশাল দায়িত্ব বহন করছেন, তা সহজ নয়। আমি নিশ্চিত, সই হওয়া সমঝোতা স্মারক ও আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব আগামী বছরগুলোতে সম্পর্ককে আরও বিকশিত করবে।’
অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নৈশভোজটি একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
ডিবিসি/পিআরএএন