লাইফস্টাইল

ভুলেও ফ্রিজে রাখবেন না যেসব খাবার

ডেস্ক প্রতিবেদন

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২৪ ০৩:৪০:৩৬ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কী ছাড়া আমাদের চলেই না, এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই একমত হবেন ফ্রিজের ব্যাপারে। কি শহর, কি গ্রাম- সবখানেই ঘরে ঘরে ফ্রিজ। বর্তমান সময়ে, বিশেষ করে নাগরিক জীবনে ফ্রিজ ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব। জীবনকে যা কিছু সহজ করেছে, তার মধ্যে অনেকেই প্রথম দিকে রাখবেন ফ্রিজকে। তবে হাতের কাছে যা পেলেন, তা-ই চট করে ঢুকিয়ে দিলেন ফ্রিজে, ব্যাপারটা তা নয়।

সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় প্রতিদিন বাজার করা হয়ে ওঠে না অনেকের। আবার কেউ কেউ চান সপ্তাহে একদিন বাজার করতে। তাই ছুটির দিনে পুরো সপ্তাহের বাজার বা ফলমূল, মাছ-মাংস কিনে রাখা হয় ফ্রিজে। অনেকে তো কাজের সুবিধার জন্য শাকসবজি কেটে বা রাতেই সকালের জন্য রুটি বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দেন। তবে এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো ফ্রিজে রাখা মোটেও উচিত নয়।

বেশ কিছু খাবার আছে যেগুলো ফ্রিজে রাখলে তাজা থাকার চেয়ে দ্রুত পচে যায়। চলুন জেনে নেয়া যাক সেসব খাবর সম্পর্কে-

শাক বা পাতা: যেকোনো ধরনের শাক বা পাতা ফ্রিজে রাখা উচিত না। এগুলো অধিক পচনশীল। ফ্রিজে রাখলে যতক্ষণ ফ্রিজে থাকে ভালো থাকে। ফ্রিজ থেকে বের করলেই নেতিয়ে পড়ে। এগুলো টাটকা খেয়ে ফেলা উচিত। তুলসীপাতা ফ্রিজে রাখলে ওই পাতা ফ্রিজের অন্যান্য খাবারের ঘ্রাণ শুষে নেয়। তাই সেই তুলসীপাতা আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না। ফুলের মতো বাটিতে পানি নিয়ে তাতে তুলসীপাতা রেখে কয়েক দিন সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

কলা: কলা সব সময়ে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা উচিত। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কলা কাঁচা থাকলেও তা পেকে যায়। তবে ফ্রিজে কলা রাখলে তা দ্রুত পচন ধরে। ফলে ফ্রিজে কলা রাখলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

টমেটো: কাঁচা বা পাকা কোনো টমেটোই ফ্রিজে রাখবেন না। টমেটো কাঁচা হলে বাইরে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে আলো–বাতাস চলাচল করতে পারে। আর পাকা টমেটো হলে সালাদ করে, রান্না করে বা টমেটো কেচাপ বানিয়ে খেয়ে ফেলুন। এই বেলা বলে রাখি, টমেটো কেচাপও ফ্রিজে রাখবেন না। স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই তিন মাস ভালো থাকবে।

পাউরুটি: অনেকেই মনে করেন ফ্রিজে রাখলে ভালো থাকে পাউরুটি। কিন্তু ধারণাটি সঠিক নয়। পাউরুটি ফ্রিজে রাখলে তা আরও বেশি শুকিয়ে যায়। পাশাপাশি এর গুণমানও নষ্ট হয়ে যায়। তাই পাউরুটি ফ্রিজে না রাখাই ভাল।

মধু: দীর্ঘ দিন মধু ভাল রাখতে ফ্রিজে রাখেন? আপনি হয়ত জানেন না, ফ্রিজে রাখলে মধুর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, পাশাপাশি গুণাগুণও নষ্ট হয়। তাই ফ্রিজে না রেখে বরং ঠান্ডা জায়গায় মধু রেখে দেন। তাতেই মধু অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকবে।

তরমুজ ও বাঙ্গি: তরমুজ, বাঙ্গি ফ্রিজে রাখবেন না। এতে এগুলোর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট দ্রুত ভেঙে যায়। তবে তরমুজ কেটে চার ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে। এর বেশি না রাখাই ভালো। মধুও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ভালো থাকে। ফ্রিজে রাখলে এর শ্বেতসার অধিক ঘন হয়ে জমে দানা দানা হয়ে যেতে পারে।

পেঁয়াজ-রসুন-আদা: রান্নার সময় বাঁচাতে অনেকেই রসুন ছাড়িয়ে কিংবা রসুন বেটে ফ্রিজে রেখে দেন। তবে এটি কোনভাবেই ঠিক নয়।  এগুলো শুকনো জায়গায় ভালো থাকে। ফ্রিজের আর্দ্রতায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বেটে ফ্রিজে রাখলেও ঘ্রাণ আর গুণাগুণ কমে যায়। এগুলো ফ্রিজে রাখলে তার গায়ে ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে। এছাড়া বাটা পেঁয়াজ-রসুন রাখার ফলে ফ্রিজের মধ্যেও হয় বিকট গন্ধ। তাই এই অভ্যাস  থাকলে তা আজই পরিহার করুন।

আলু: শর্করা–জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম আলুও ফ্রিজে রাখা যাবে না। রাখলে এর শ্বেতসার ভেঙে যায়, আলু নরম হয়ে পড়ে। ফলে আলুর স্বাদ নষ্ট হয় আর মুখে নিলে ‘বালু বালু’ লাগে। খোলা ঝুড়িতে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ছায়ায় আলু আর মিষ্টি আলু সংরক্ষণ করা যায়। আলুর মতো মিষ্টি আলুও ফ্রিজে রাখলে এর গঠন আর স্বাদে পরিবর্তন আসে। আলু তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। ফলে সেখানে শর্করার পরিমাণও বেড়ে যায়।

অন্যান্য: ফল বা ড্রাই ফ্রুটসও কখনো ফ্রিজে রাখা উচিত না। এতে শুকনো ফলগুলো নরম হয়ে স্বাদ হারিয়ে ফেলে। গুঁড়া মসলা ফ্রিজে রাখলেও দ্রুত নষ্ট হয়। গুঁড়া মসলা অন্ধকার আর শুষ্ক স্থানে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে ভালো থাকে। যেকোনো পিঠা, মিষ্টি, কেক, কুকিজ ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় এগুলোর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। এসব খাবার বাইরে এয়ারটাইট বাক্সে রাখলে ভালো থাকে। এছাড়া, আপেলের মিষ্টি ও রসাল স্বাদ অক্ষুণ্ন রেখে খাওয়ার জন্য বাইরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখলে স্বাদ নষ্ট হবে আর কচকচে ভাবটিও থাকবে না।

রান্নায় ব্যবহৃত তেল স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই ভালো থাকে। তবে বাদামের তেল ফ্রিজে রাখতে হয়। আচারও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে স্বাদ, গন্ধ ও গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। জ্যাম আর জেলির বেলায়ও একই কথা খাটে। কোনো ধরনের সালাদ ড্রেসিং ফ্রিজে রাখা ঠিক না।

ডিবিসি/ এসএসএস

আরও পড়ুন