দেশ এখন পার করছে ভূমিকম্প আতঙ্ক। অবশ্য বাংলাদেশের িজন্য ভূমিকম্প ঝুঁকি নতুন কিছু নয়। একটু কষ্ট করে, মানচিত্রের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থল বা ফল্ট লাইনে বাংলাদেশের অবস্থান হওয়ায় ভূমিকম্পের ঝুঁকিও তুলনামূলক বেশি এই অঞ্চলে।
ভূমিকম্প এমন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা ঠেকানো অসম্ভব। তবে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চললে এর ক্ষয়ক্ষতি এবং জীবনহানির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
করণীয় (যা করবেন)
- নিরাপদ আশ্রয় নিন (ড্রপ, কভার, হোল্ড অন): যদি আপনি ঘরের ভেতরে থাকেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে বসে পড়ুন (ড্রপ)। এরপর মজবুত টেবিল বা ডেস্কের নিচে ঢুকে নিজেকে ঢেকে দিন (কভার)। কম্পন না থামা পর্যন্ত শক্ত করে সেটিকে ধরে রাখুন (হোল্ড অন)।
ভেতরের দিকে সরে যান: দরজা বা জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। কোনো আসবাব, কাঁচ বা দেয়ালের বড় অংশ ভেঙে পড়লে তাতে আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে।
মাথা ও ঘাড় রক্ষা করুন: যদি আশেপাশে কোনো মজবুত আশ্রয় না পান, তবে দেওয়ালের ভেতরের দিকের কোণে বসে পড়ুন এবং হাত দিয়ে মাথা ও ঘাড় ঢেকে রাখুন।
খোলা জায়গায় চলে যান: যদি আপনি বাইরে থাকেন, তবে ভবন, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি এবং তার থেকে দূরে সরে যান এবং খোলা জায়গায় অপেক্ষা করুন।
গাড়িতে থাকলে: ধীরে ধীরে গাড়ি থামিয়ে দিন এবং গাড়ির ভেতরেই থাকুন। গাড়ির উপরে যাতে কিছু ভেঙে না পড়ে, এমন জায়গা বেছে নিন। কম্পন না থামা পর্যন্ত গাড়িতেই থাকুন।
ভূমিকম্প থামলে: সাবধানে বের হন। বৈদ্যুতিক সংযোগ, গ্যাস সংযোগ এবং জল সরবরাহ বন্ধ করে দিন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করুন এবং জরুরি সতর্কতা মেনে চলুন।
বর্জনীয় (যা করবেন না)
- দৌড়াদৌড়ি করবেন না: কম্পনের সময় দৌড়াদৌড়ি করলে আঘাত পাওয়ার বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
- লিফট ব্যবহার করবেন না: বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে বা লিফট আটকে যেতে পারে। সিঁড়ি ব্যবহার করা নিরাপদ।
- দরজার নিচে দাঁড়াবেন না: আধুনিক ভবনগুলোতে দরজার কাঠামো ততটা মজবুত হয় না। এর চেয়ে টেবিলের নিচে আশ্রয় নেওয়া বেশি নিরাপদ।
- ঝুলন্ত জিনিস থেকে দূরে থাকুন: ঝাড়বাতি, ফ্যান বা তাক থেকে কিছু পড়ে যেতে পারে। এমন জিনিসের নিচে দাঁড়াবেন না।
- সমুদ্র সৈকতে যাবেন না: উপকূলীয় অঞ্চলে থাকলে ভূমিকম্পের পর সুনামির সতর্কতা জারি হতে পারে। সেক্ষেত্রে সমুদ্র সৈকত থেকে দ্রুত উঁচু ও নিরাপদ স্থানে চলে যান।
- ফোন ব্যবহার করবেন না (জরুরি ছাড়া): জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ফোন লাইন খোলা রাখুন।
ডিবিসি/এফএইচআর