যুক্তরাজ্যে ভোটাধিকারের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছরে নামিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার।
এই পদক্ষেপকে ঘিরে পুরো দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। লেবার পার্টির এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্যের প্রায় ১৬ লক্ষ তরুণ-তরুণী প্রথমবারের মতো দেশের ভাগ্য নির্ধারণে নিজেদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাবে।
বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাব আনার পর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এর পক্ষে জোরালো যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, "যারা কাজ করার এবং সরকারকে কর দেওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক, তাদের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রেও মতামত দেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। আপনি যদি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন, তবে আপনার দেওয়া অর্থ কোন খাতে ব্যয় হবে বা সরকার কোন পথে চলবে, সে বিষয়ে আপনার কথা বলার সুযোগ থাকতেই হবে।"
এই সংস্কারের পেছনে সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা। ২০২৪ সালের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ২০০১ সালের পর সর্বনিম্ন, যা দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া, এই আইন পুরো যুক্তরাজ্যে ভোটাধিকারের নিয়মে সামঞ্জস্য আনবে। বর্তমানে স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের স্থানীয় নির্বাচনে ১৬ এবং ১৭ বছর বয়সীদের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকলেও, ব্রিটিশ নির্বাচনে তারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি বর্তমানে সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কনজার্ভেটিভ পার্টি। তারা এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক নয়। দলের একজন মুখপাত্র প্রশ্ন তুলেছেন, "যদি ১৬ বছর বয়সীদের ভোট দেওয়ার মতো গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়, তবে কেন তাদের লটারি কেনা, অ্যালকোহল পান করা, বিয়ে করা বা দেশের জন্য যুদ্ধে যাওয়ার মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হচ্ছে না? আইনের এই অসামঞ্জস্য তরুণদের বিভ্রান্ত করবে।"
এই নতুন আইন কার্যকর হলে যুক্তরাজ্যের ভোটার তালিকায় প্রায় ১.৬ মিলিয়ন নতুন নাম যুক্ত হবে। ২০২৯ সালের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনেই তারা প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আইটিভি নিউজের পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ৩৩% লেবার পার্টিকে, ২০% রিফর্ম ইউকে-কে, ১৮% গ্রিন পার্টিকে, ১২% লিবারেল ডেমোক্র্যাটসকে এবং ১০% কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দেবে বলে জানিয়েছে।
ডিবিসি/এমএআর