ভোলার বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে বোতলজাত সায়াবিন তেল। অভিযোগ রয়েছে, কিছু কিছু ডিলার গুদাম ভর্তি তেল রেখে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে আদায় করছে অতিরিক্ত টাকা।
এ কারণে ভোক্তাদের মাঝে সয়াবিনের হাহাকার দেখা দিয়েছে। ফলে বোতলজাত সয়াবিন তেল না পেয়ে বেশি দামে খোলা তেল নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কয়েক দিন আগে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যহত থাকলেও বেপরোয়া ব্যবসায়ীরা।
ভোলা শহরের খালপাড় সড়কের তেলের ডিলার মোহন বনিক জানান, গত ২০ দিন ধরে কোম্পানি বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ করছে না। এজন্য সংকট দেখা দিয়েছ। তেল না পাওয়া কারণে ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম নেয়া হচ্ছে ৭৬০ টাকা থেকে ৭৮০ টাকা। তবুও পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৬০ টাকা। আর খোলা ১ কেজি তেলের দাম ২১০ টাকা হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী বোতলজাত তেল ভেঙে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।
পুষ্টি কোম্পানির তেলের পরিবেশক খোকন বনিক জানান, তেল তো দুরের কথা কোম্পানির সঙ্গে ঠিকমত কথা বলাও যাচ্ছে না। অগ্রীম ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে আমরা এক মাস ধরে এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। এদিকে বাজারে প্রচুর তেলের চাহিদা।
সরেজমিনে ভোলার অধিকাংশ দোকানে খোলা তেল থাকলেও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। কেন বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই এই প্রশ্নের জবাবে তারা বলছেন, ডিলাররা তেল না দেয়ায় তারা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারছে না।
তবে অভিযোগ রয়েছে, এসব বোতলজাত সয়াবিন তেল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যে চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বাজারে বিক্রি করছেন। যার সত্যতা মিলে অনুসন্ধানে। ভোলা শহরের বাসিন্দা উৎপল নামে এক ক্রেতা সারা বাজার ঘুরে ৭৬০ টাকার একটি ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল এক হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। তিনি আরো জানান, কোথাও তেলের বোতল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে কাঁচা বাজারের একটি মার্কেট থেকে তিনি বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে তেল কিনেন।
অপরদিকে শহরের বিএভিএস রোডের বাসিন্দা উত্তম কুমার ঘোষ জানান, তিনিও ৭৬০ টাকার একটি ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনেছেন ৯৩০ টাকা দিয়ে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক খুচরা দোকানি জানান, প্রত্যেক পরিবেশক গুদাম থেকে তেল সরিয়ে বিভিন্ন স্থানে তেল মজুত করেছে। খুচরা বিক্রেতারা পরিবেশকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, তেলের ডিলাররা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বোতলজাত তেলের সাথে নিন্মমানের চাপাতিসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে বাধ্য করছে। ওইসব পণ্য না নিলে তাদেরকে বোতলজাত তেল দেওয়া হয় না। যে কারণেও খুচরা বিক্রেতারা ডিলারদের কাছ থেকে পাইকারি বোতলজাত তেল পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান জানান, গত বৃহস্পতিবার তারা ভোলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। তখন এতটা সংকট ছিলনা। তবে তিনি ধারণা করছেন ঈদকে পূঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। তবে, এ ব্যপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।