গত ১৭ই জুন বাসা থেকে প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি ঈস্পিতা। পরদিন তার বাবা ভোলা সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরই মধ্যে ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে এক নারীর নদীতে পড়ে যাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নিখোঁজের তিন দিন পর, ২০ই জুন পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে এক নারীর অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। পরে ঈস্পিতার বাবা সেখানে গিয়ে মরদেহটি তার মেয়ের বলে শনাক্ত করেন।

রিকশাচালক বাবা ও গৃহিণী মায়ের স্বপ্ন ছিল, বড় মেয়ে পড়াশোনা শেষ করে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু পরিবারের বড় সন্তানকে হারিয়ে তার মা-বাবা এখন শোকে পাথর। তারা এই মৃত্যুকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এবং ঘটনার দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ঈস্পিতার এই অস্বাভাবিক মৃত্যু তার সহপাঠীরাও মেনে নিতে পারছেন না। তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটন ও দোষীদের বিচারের দাবিতে গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাত ইসলাম ইফতি বলেন, "আমরা ঈস্পিতার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। এর পেছনে কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।"

জানা গেছে, পড়াশোনার পাশাপাশি ঈস্পিতা বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে সক্রিয় এবং কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। জানা যায়, এর আগেও একবার তিনি কলেজের চারতলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, যদিও এ বিষয়ে তিনি সহপাঠীদের সঙ্গে কখনো আলোচনা করেননি।

এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাছনাইন পারভেজ জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিবিসি/এএনটি