জাতীয়

মদ: বিদেশি ব্র্যান্ডের লেভেলে কী বিক্রি হচ্ছে?

ময়ূখ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৩:৪২:৫৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

এক বছরে আমদানি হয়নি বিদেশি ব্র্যান্ডের কোনো মদ। কিন্তু চাহিদা থাকায় বিক্রি থেমে নেই পানশালা ও বিভিন্ন হোটেলে।  তাহলে কোথা থেকে আসছে এসব মদ? বিদেশি ব্র্যান্ডের লেভেলে কী বিক্রি হচ্ছে?

হঠাৎ করেই ভেজাল মদের বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে গেছে। ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃত্যুর তালিকা লম্বা হচ্ছে ডিসেম্বর থেকেই। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল এবং সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে গড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে মদের বিষক্রিয়ায়। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের অভিযানে নকল মদ উদ্ধারের পর জানা গেছে, মদের সাথে শিল্প কারখানার কাজে ব্যবহৃত মিথাইল অ্যালকোহল এবং ডাই-ই-থাইলিন গ্লাইকল যোগ করে তৈরি হচ্ছে এসব। আর এগুলো শেষ পর্যন্ত মানবদেহের প্রাণহানি ঘটার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল ক্যামেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ এমরান বলেন, “মিথানলটা ফরমাল ডিহাইডে পরিণত হয়। লিভারে এনজাইমেটিক প্রক্রিয়ায়। তারপর সেটা ফরমিক এসিড তৈরি করে। এতে লিভার পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। দেহে শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মানুষ দ্রুত মারা যায়।” 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বছরে প্রায় গড়ে ৭৫ লাখ লিটার মদ বিক্রি হয় দেশ জুড়ে।  ২০১৯ সালে দেশি মদ ৭০ লাখ লিটার, বিদেশি মদ ১ লাখ ৮০ হাজার লিটার এবং বিয়ার বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার লিটার। 

তবে করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মদ আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তা তুলে নেয়ার পর আমদানির লাইসেন্সধারী ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র দুইটি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে বিদেশি মদ আমদানি করেছে। চট্টগ্রামের ওই প্রতিষ্ঠান দুটি শুধু বিদেশি জাহাজের নাবিকদের কাছে বিক্রির জন্য তা আমদানি করেছে। আর ৩য় প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন অনুমতি নিলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি মদ আমদানি করেনি।

তাহলে দেশে ফরেন লিকারের নামে কি বিক্রি হচ্ছে? তার কোন সদুত্তর নেই কোনো দপ্তরে। চাহিদা থাকায় ভেজাল মদ তৈরি ও বিক্রি শুরু করেছেন অসাধু বিক্রেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামার কথা জানান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, "যারা পারমিট নিয়েছেন তাদের আমরা বলবো আমরা যেখানে অনুমোদন দিয়েছি সেখান থেকে ক্রয় করেন। আমরা অনুরধ করবো, অন্যায়ভাবে মদ ক্রয় করবেন না। এতে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাবে। এজন্য আমরা নজরদারি বৃদ্ধি করছি এবং আমাদের সকল কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি যেন তদন্ত করে এবং এমন ঘটনা না ঘটে।”  

শুধু অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকেই মদ কিনতে বলছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন