বাংলাদেশ, জাতীয়

মধ্যরাতে ড্রোন শো: শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ব্যতিক্রমী পুনর্জাগরণ

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১৫ই জুলাই ২০২৫ ০৭:৩৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও পুনর্জাগরণ উপলক্ষে সোমবার মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হলো। রাত সাড়ে এগারোটায় পশ্চিম আকাশ থেকে ভেসে আসা ২০০০ ড্রোনের সমন্বয়ে এক বর্ণিল ও আবেগঘন প্রদর্শনী উপস্থিত শত শত ছাত্র-জনতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। প্রায় দশ মিনিটের এই প্রদর্শনীতে আলোকসজ্জা ও শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে বিগত সরকারের আমলের নানা নিপীড়নমূলক ঘটনার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়।

অনুষ্ঠানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আগত বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন। ড্রোন প্রদর্শনী শুরু হওয়ার সাথে সাথে পুরো শহীদ মিনার এলাকা পিনপতন নীরবতায় ছেয়ে যায় এবং দর্শনার্থীরা মোবাইল ক্যামেরায় এই বিরল মুহূর্ত ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

 

আকাশে ড্রোনের মাধ্যমে একে একে ফুটিয়ে তোলা হয় স্বৈরাচারী শাসনামলের খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও নৈরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিচ্ছবি। ১৪ই জুলাইয়ের প্রতিচ্ছবি দিয়ে প্রদর্শনী শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বিডিআর হত্যাকাণ্ড, গুম হওয়া বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, আরমান, মাইকেল ও সুমনের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়। এছাড়াও শাপলা চত্বরের ঘটনা, বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড এবং সরকারের মদদপুষ্ট দুর্নীতিবাজদের ছবি প্রদর্শন করা হয়।

 

প্রদর্শনীতে ‘লাইলাতুল ইলেকশন’, ‘পোস্ট ডিলিট করো’, ‘তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?’, ‘তুমি কে, আমি কে’, ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’, এবং ‘শোনো মহাজন, আমরা অনেকজন’-এর মতো আলোচিত স্লোগানগুলো ড্রোনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়, যা উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আবেগ ও উল্লাসের জন্ম দেয়। প্রদর্শনী শেষে ড্রোনগুলো পুনরায় পশ্চিম আকাশে মিলিয়ে যায়।

 

এই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাও এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।

 

ড্রোন প্রদর্শনীর পর সমবেত ও একক সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১৪ই জুলাই পুনর্জাগরণের এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান শেষ হয়। এই আয়োজন জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার একটি শক্তিশালী প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন