অভিনয় দিয়ে মন জয় করেছিলেন কোটি বাঙালির। রূপালি পর্দা ছাড়িয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন রুচিবান-মার্জিত বাঙালির আদর্শ পুরুষও। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমার। আজ তার ৯৪তম জন্মদিন।
অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কোটি দর্শক চেনে উত্তম কুমার নামে। তিনি বাংলা সিনেমার মহানায়ক। বলা হয়ে থাকে, একজন পুরুষ সিনেমাতে যত ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন তার সবগুলোই করেছেন তিনি।
‘মায়াডোর’ সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ‘দৃষ্টিকোণ’ তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা। প্রথম নজর কাড়েন ‘বসু পরিবার’-এ। তবে নড়বড়ে আসনটি পাকাপোক্ত করেন ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ দিয়ে।
১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ দিয়ে বাংলা সিনেমার দর্শকেরা পায় সব থেকে সফল ও জনপ্রিয় ‘উত্তম-সুচিত্রা’ জুটিকে। ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ আর ‘সাগরিকা’-র মতো কালজয়ী সব সিনেমার জনপ্রিয় জুটি উত্তম-সুচিত্রা।
তিন দশকের অভিনয় জীবনে বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে দুশো'র বেশি চলচ্চিত্রে দেখা গেছে উত্তম কুমারকে। তবে বেশিরভাগ ছবিই বাণিজ্যিক সফলতার মুখ দেখেনি। এরপরও মহানায়কের আসনে উত্তম কুমারকে বসাতে একটুও দ্বিধা করেনি। 'এ্যান্টনি ফিরিঙ্গি' ও 'চিড়িয়াখানা' ছবিতে অসামান্য অভিনয় দক্ষতার জন্য উত্তম কুমার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। চিড়িয়াখানা ছাড়াও সত্যজিৎ রায় উত্তম কুমারকে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন 'নায়ক'।
সর্বকালের সেরা এই অভিনেতা ১৯২৬ সালের আজকের এই দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ওপার-এপার দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয়। বড় পর্দা ছাড়াও তিনি মঞ্চেও একজন সফল অভিনেতা হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই ৫৩ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা। পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও ভুবন ভোলানো সেই হাসির জন্য এখনো মানুষের মনে রয়ে গেছেন মহানায়ক।