বাংলাদেশ, রাজধানী

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি; মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ২১শে জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৪:২৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

রাজধানীর উত্তরা আজ সোমবার (২১শে জুলাই) এক ভয়াবহ ও অভূতপূর্ব ট্র্যাজেডির সাক্ষী হলো। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটসহ ২০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ গুরুতর দগ্ধ শতাধিক আহত শিক্ষার্থী বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় মঙ্গলবার (২২শে জুলাই) দেশজুড়ে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

যেভাবে ঘটল দুর্ঘটনা: আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বিমানবাহিনীর চীনা প্রযুক্তিতে তৈরি এফ-৭ বিজিআই মডেলের বিমানটি আজ সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে। এর মাত্র ১২ মিনিট পর, ১টা ১৮ মিনিটে, এটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের 'প্রজেক্ট-২' নামক দোতলা ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনানুযায়ী, বিমানটির সম্মুখভাগ ভবনের সিঁড়িতে আঘাত করে এবং এর দুটি ডানা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির দুটি শ্রেণিকক্ষকে ধ্বংস করে দেয়। মুহূর্তেই ক্লাসরুম দুটিতে আগুন ধরে যায়। ভবনটি প্রাথমিক শাখার হলেও স্কুল ছুটির পর সেখানে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির কোচিং ক্লাস চলায় হতাহতের সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যায়।

 

হাসপাতাল জুড়ে হাহাকার, বাড়ছে শঙ্কা: দুর্ঘটনার পর আহতদের দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিবেশ অগ্নিদগ্ধ শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সেখানে আনা হচ্ছে এবং অনেকের অবস্থাই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। কম গুরুতর আহতদের উত্তরা আধুনিক মেডিকেলের মতো স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হলেও আশঙ্কাজনক প্রায় সবাইকে বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

 

হৃদয়বিদারক দৃশ্য ও শোকের মাতম: দুর্ঘটনাস্থল থেকে শুরু করে হাসপাতাল পর্যন্ত শুধুই স্বজন হারানোর আহাজারি। অনেক অভিভাবক এখনো তাদের সন্তানের খোঁজ পাননি। লাকি আক্তার নামের এক মা তার ছোট সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে দিশেহারা। এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এক মর্মান্তিক খবর তৃতীয় শ্রেণির এক শিশুকে দগ্ধ ও আহত অবস্থায় বার্ন ইউনিটে আনা হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো অভিভাবকের খোঁজ মেলেনি।

 

সরকারি পদক্ষেপ ও জরুরি যোগাযোগ: এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার (২২শে জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। আহতদের দ্রুত আনা-নেওয়ার সুবিধার্থে মেট্রোরেলের একটি বগি রিজার্ভ রাখা হয়েছে।

 

নিখোঁজ শিক্ষার্থী ও জরুরি তথ্যের জন্য কর্তৃপক্ষ ও স্কুল প্রশাসন একাধিক হটলাইন নম্বর চালু করেছে। নম্বরগুলো হলো:

 

মিলিটারি রেস্কিউ ব্রিগেড: 01769024202

সিএমএইচ বার্ন ইউনিট: 01769016019

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট (জরুরি): 01949043697

মাইলস্টোন স্কুল (অ্যাডমিন অফিসার): 01814774132

জাতীয় জরুরি সেবা: ৯৯৯

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন