মিয়ানমারের জলসীমায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের সময় তিনটি ফিশিং ট্রলারসহ ১৬ জন জেলেকে আটক করেছে আরাকান আর্মি।
আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক ও রোহিঙ্গা জেলেরা রয়েছেন। টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ মঙ্গলবার (১৮ই নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে জেলের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজেদ আহমেদ জানান, সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় টেকনাফ পৌরসভার কলেজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা জাকিরের মালিকানাধীন একটি ট্রলারসহ ৬ জন রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা অপর দুটি ট্রলারের আরও ১০ জন জেলের আটকের খবর পাওয়া গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক’ জানিয়েছে, বাংলাদেশি মাছ ধরার নৌকার অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ‘আরাকান কোস্টাল সিকিউরিটি পেট্রোল’ নিয়মিত টহল জোরদার করেছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ১৮ই নভেম্বর সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে মংডু টাউনশিপের থাওয়াইং চাউং গ্রামের পশ্চিম উপকূল থেকে আনুমানিক ২.৭ কিলোমিটার দূরে অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী একটি ট্রলারসহ ৬ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করে। এ সময় ট্রলারটি থেকে মাছ ধরার জাল, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও বাংলাদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।
একই দিনে রাথেডং টাউনশিপ উপকূল থেকে প্রায় ৩.৫৮ কিলোমিটার দূরে পরিচালিত পৃথক আরেকটি অভিযানে আরও দুটি ট্রলারসহ ১০ জন জেলেকে আটক করা হয়। এই ট্রলারগুলো থেকেও জাল, মাছ ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে তিনটি ট্রলার ও ১৬ জন জেলেকে আটকের পর জব্দকৃত মালামালসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরাকান অঞ্চলের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর আগে, গত ১২ই নভেম্বর বঙ্গোপসাগরের অদূরে মাছ শিকারের সময় জলসীমানা অতিক্রম করায় দুটি ট্রলারসহ ১৩ জন রোহিঙ্গা জেলেকে আটক করেছিল আরাকান আর্মি।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১৮ই জানুয়ারি থেকে ১৮ই জুলাই পর্যন্ত আরাকান কর্তৃপক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের স্বার্থে ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা মানবিক কারণে মুক্ত করে দিয়েছিল। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আরাকান কর্তৃপক্ষ।
ডিবিসি/এএমটি