'পোস্ট ডিলেট কর সমস্যা হবে', 'শোনো মহাজন আমরা অনেকজন', 'আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাহিরে'সহ আলোচিত বিভিন্ন স্লোগান ড্রোন শোতে ভেসে উঠল। তুলে ধরা হলো বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া ইলিয়াস আলী, মাইকেল চাকমা থেকে বুয়েটে ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে নিহত হওয়া আবরার ফাহাদের ছবি।
এরকম নানা আয়োজনে ভেসে উঠল জুলাই স্মৃতি। গত বছরের ১৪ই জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মেয়েরা বেরিয়ে এসে জুলাই আন্দোলনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছিল, যার মধ্য দিয়ে পতন হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের।
জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ওই দিনটিকে 'জুলাই কন্যা দিবস' হিসেবে উদযাপনের অংশ হিসেবে ড্রোন শো, গান আর কথামালা আয়োজন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৪ই জুলাই) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে 'মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম' শিরোনামে জুলাই পুনর্জাগরণের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন অনেকে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। রাত সাড়ে ১১ টায় অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে শুরু হয় মিউজিক্যাল ‘ড্রোন শো’। বাংলাদেশ সরকার এবং চীন সরকারের যৌথভাবে ওড়ানো প্রায় ২ হাজার ড্রোন উড্ডয়নের মাধ্যমে জুলাইয়ের গল্প তুলে ধরা হয় বলে জানান আয়োজকরা।
প্রথম ধাপে দেখানো হয় কীভাবে বাংলাদেশ জুলাইয়ে এসে পৌঁছালো। তুলে ধরা হয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হওয়া গুম-খুনের চিত্র। আর দ্বিতীয় ধাপে দেখানো হয় কেমন করে ১৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হল। এর আগে অনুষ্ঠানে গান এবং স্মৃতিচারণে উঠে আসে জুলাইয়ের নানা গল্প। গান শোনান সায়ান, এলিটা করিম ও পারসা মাহজাবীন। 'ইলা লা লা' এবং 'এফ মাইনর' ব্যান্ডের শিল্পীদের পরিবেশনাও ছিল।
জুলাইয়ের ঘটনাকে উপজীব্য করে নির্মিত কয়েকটি তথ্যচিত্রও দেখানো হয়। এর মধ্যে একটি তথ্যচিত্রে উঠে আসে বুয়েটে নিহত হওয়া আবরার ফাহাদের কথা। অনুষ্ঠানে জুলাইয়ের স্মৃতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুমসহ অনেকে।
জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক উমামা ফাতেমা বলেন, জুলাই কারো একার না। জুলাই সবার, জুলাই পুরো বাংলাদেশের। জুলাই আন্দোলনের আরেক সংগঠক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ২৪ জুলাইয়ের আগেও মেয়েদের রাজনীতি করা নিয়ে কটু কথা হত। ওই মেয়েটা রাজনীতি করে, মেয়েদের রাজনীতি করা যেন অপরাধ! দুঃখজনক; সেই কথা এখনো শুনতে হয়। পরিবর্তনটা হয়নি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি পুনর্জাগরণে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ আয়োজনের ব্যবস্থাপনায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সহযোগিতায় ছিল মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় আবরার ফাহাদকে নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘দিপক কুমার গোস্বামী স্পিকিং’ ও ‘জুলাই বিষাদ সিন্ধু’ চলচ্চিত্র।
ডিবিসি/কেএলডি