বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য আরও সহজ, সুবিধাজনক ও নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে মার্কেন্টাইল ব্যাংক (পিএলসি) ও মাস্টারকার্ড যৌথভাবে একাধিক নতুন কার্ডসেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার (১৭ই মে) রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি- এর চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও ড. মো. জাহিদ হোসেন এবং সিএফও ড. তাপস চন্দ্র পালসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এম. এ খান বেলাল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, পরিচালক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসাইন ও শামীম আহম্মদ, হেড অব কার্ডস মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাস্টারকার্ড বাংলাদেশ এর ডিরেক্টর জাকিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও মাস্টারকার্ডের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, কর্মকর্তাসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন কার্ড পোর্টফোলিওতে রয়েছে, মাস্টারকার্ড টাইটেনিয়াম ক্রেডিট কার্ড, ওয়ার্ল্ড মাস্টারকার্ড ক্রেডিট কার্ড, মাস্টারকার্ড ডেবিট কার্ড, মাস্টারকার্ড প্লাটিনাম গ্লোবাল ডেবিট কার্ড এবং একটি মাস্টারকার্ড প্রিপেইড কার্ড। এসব কার্ডে সংযুক্ত রয়েছে ‘কন্টাক্টলেস প্রযুক্তি’, ‘ডুয়াল কারেন্সি’ সুবিধা এবং শক্তিশালী ‘টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ নিরাপত্তাব্যবস্থা, যা গ্রাহকদের দেশ-বিদেশে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ লেনদেনের সুবিধা দেবে। এই কার্ড ব্যবহারকারীরা ভ্রমণ, লাইফস্টাইল ও রেস্টুরেন্টে খরচের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় ও সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া মাস্টারকার্ড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির দেশব্যাপী ৯,০০০-এর অধিক পার্টনার মার্চেন্ট আউটলেটে থাকছে আকর্ষণীয় অফার ও ডিসকাউন্ট। তদুপরি, দেশি-বিদেশি এটিএম থেকে যে কোনো সময় নগদ টাকা তোলার সুবিধাও রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ডিজিটাল লেনদেনকে যতটা সম্ভব উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ এটি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং প্রতিটি লেনদেন সহজে ট্র্যাক করা যায়- বিশেষ করে মাস্টারকার্ডের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে। ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পেলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমাধান করা দরকার। যেমন ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদ, যা এক্ষেত্রে অনেকের অংশগ্রহণে অনাগ্রহ তৈরি করে। বিশেষ করে প্রবাসী আয়ের গতি ত্বরান্বিত ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে ক্রেডিট কার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বেসরকারি খাতের উন্নয়ন এবং আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তরে আরও অগ্রগতি আনতে উদ্যোগ চলমান রাখায় আমি মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও মাস্টারকার্ডের প্রতি শুভকামনা জানাই।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, “মাস্টারকার্ড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি’র প্রতিনিধি এবং সম্মানিত অতিথিদের সঙ্গে এখানে থাকতে পেরে আমি গর্বিত। মোবাইল ব্যাংকিং, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশের আর্থিক খাত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই অগ্রগতিগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতে আরও এমন কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চাই, যা আমাদের আরও স্মার্ট ও নিরাপদ ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।”
মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মতিউল হাসান বলেন, “আমরা মাস্টারকার্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বে নতুন ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ড পণ্যসমূহ চালু করতে পেরে গর্বিত। আমাদের সদ্য অর্জিত ‘প্রিন্সিপাল মেম্বারশিপ’-এর আওতায় চালু হওয়া এই কার্ডগুলো গ্রাহকদের জন্য আধুনিক ও গ্রাহককেন্দ্রিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ। উন্নত বৈশিষ্ট্য ও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাসহ এই কার্ডগুলো গ্রাহকদের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা, নিরাপত্তা ও মূল্য নিশ্চিত করবে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ক্যাশলেস ও ডিজিটালি সক্ষম সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ।” এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে মাস্টারকার্ড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকোসিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করতে এবং গ্রাহকদের জন্য আধুনিক লেনদেন সুবিধা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করে যাবে।"
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, “বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের ইস্যুইং পার্টনার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে এই নতুন কার্ডগুলোর উদ্বোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি গ্রাহকদের জন্য উদ্ভাবনী, নিরাপদ এবং লাভজনক আর্থিক সমাধান প্রদানে মাস্টারকার্ড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এই কার্ডগুলো গ্রাহকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণে সহায়তা করবে এবং সীমাহীন ও নির্বিঘ্ন লেনদেনের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের মাঝে ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবহার প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ডিবিসি/ রাসেল