পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে ডিভোর্স দেয়ার পর ৮ মাস বয়সী শিশু কন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড়লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।
ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বাচ্চাকে ফিরে পেতে। আদালত প্রতিবেদন ও শিশুটিকে খুঁজে পেতে পুলিশকে নির্দেশ করলেও খুঁজে পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে। এ ঘটনায় ফরিদপুর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। ওই মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করেছেন।
তিন বছর আগে মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীতে গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে মৌখিকভাবে তালাক হয়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান তালাকের সময় তার স্বামী জোর করে শিশু কন্যা তানহা (৮মাস) কে রেখে দেয়। পরে তার স্বামী ঐ শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের নিকট দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাইতে পারিনা। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই। ওরা বলছে আমরা দেড়লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি, যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও।
ঘটনাটি নিয়ে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল করলে অপর একজন রিসিভ করে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এরপর আদালত সিদ্ধান্ত নিবে।
ডিবিসি/ অমিত