আন্তর্জাতিক, অন্যান্য

মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে স্বর্ণের মুদ্রা চালু করল জিম্বাবুয়ে

ফারুক

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২৭শে জুলাই ২০২২ ১২:৪১:৪৯ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মুদ্রাস্ফীতি এবং নিজস্ব মুদ্রার দরপতন নিয়ন্ত্রণে স্বর্ণের মুদ্রা চালু করেছে আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে। এই মুদ্রার নাম দেয়া হয়েছে মোসি-ওয়া-তুনইয়া যা মূলত ভিক্টোরিয়া ফলসকে নির্দেশ করে। সম্প্রতি স্বর্ণের মুদ্রা চালু করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চলতি মাসে জিম্বাবুয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার ২শ' শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ছাড়িয়েছে ১শ' ৯০ শতাংশ।  

 

আন্তর্জাতিক বাজারে এক আউন্স স্বর্ণের মূল্যের সাথে ৫ শতাংশ উৎপাদন খরচ যোগ করে নির্ধারণ করা হবে প্রত্যেকটি মুদ্রার দাম। ভাঙতি থাকা সাপেক্ষে দোকানপাটে স্বর্ণের মুদ্রা ব্যবহার করা যাবে। চলতি বছর বিশ্বের প্রধান প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে জিম্বাবুয়ের ডলারের বড় দরপতন হয়।  

 

প্রায় চার দশক ক্ষমতায় থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের সময় ২০০৯ সালে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে নিজস্ব মুদ্রার বদলে মার্কিন ডলার ব্যবহার শুরু করে জিম্বাবুয়ে।

 

এরপ্রায় ১০ বছর পর দেশটিতে নতুন মুদ্রা চালু করলেও দ্রুত তারও দরপতন হয়।

 

দেশটির রিজার্ভ ব্যাংক অব জিম্বাবুয়ে (আরবিজেড) সোমবার বাজারে দুই হাজার সোনার কয়েনের প্রথম ব্যাচ প্রকাশ করে। দেশটির মুদ্রার অবমূল্যায়নের মধ্যে এই স্বর্ণমুদ্রা বিনিয়োগকারীদের মূল্য সঞ্চয় করার বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। সোমবার প্রতিটি স্বর্ণমুদ্রার বিক্রয় মূল্য ছিল ১ হাজার ৮২৩.৮০ মার্কিন ডলার। 

 

আরবিজেডের গভর্নর জন মাঙ্গুদিয়া বলেছেন, বাজারে স্বর্ণমুদ্রার প্রভাবের ব্যাপারে আমাদের কৌতূহল ছিল সবসময়। এগুলো কীভাবে কাজ করে তা পরীক্ষা করে দেখতে আমরা প্রাথমিকভাবে মুদ্রাগুলো বাজারে ছেড়েছি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত সোনার কয়েন রয়েছে। স্বর্ণমুদ্রার প্রথম টার্গেট হচ্ছে স্থানীয় মুদ্রার ভারসাম্য রক্ষা করা।


 
মাঙ্গুদিয়া বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাবলিক সুবিধা নিশ্চিত করতে এক মাসের মধ্যে কয়েনগুলোর নিম্নমূল্য প্রকাশ করবে। মানুষ সমান্তরাল মূল্য পেতে চায়। যেহেতু স্বর্ণ একটি রিজার্ভ সম্পদ, সেহেতু মানুষকে আর হয়রানি হতে হবে না। স্বর্ণমুদ্রা আন্তর্জাতিক মূল্যে বিক্রি করা হবে।

 

মাঙ্গুদিয়া বলেন, সোনার কয়েনগুলোর মাধ্যমে তরল সম্পদের অবস্থান পরিষ্কার হবে। এর মাধ্যমে নির্ধারিত সম্পদের স্থিতি বুঝতে পারা সম্ভব। এছাড়া এসব স্বর্ণমুদ্রা জামানত হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এগুলো লেনদেনযোগ্য।

 
গত মাসে মাঙ্গুদিয়া ঘোষণা করেছিলেন, বাজারে স্বর্ণমুদ্রা চালু করা হবে, যা বিনিয়োগকারীদের মূল্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং বিনিয়োগের সুযোগ হিসেবে সোনার মুদ্রা ব্যবহার করা হয়। যদিও জিম্বাবুয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সেরকম ব্যাপকভাবে স্বর্ণমুদ্রা ব্যবহার করা হয় না।

দেশটির অর্থনীতিবিদ প্রোসপারাস চিতাম্বরা বলেন, জিম্বাবুয়েতে বিরাজ করছে দীর্ঘস্থায়ী মুদ্রাস্ফীতি। তাই আশা করা হচ্ছে এই স্বর্ণমুদ্রা বিশাল বাজার সৃষ্টি করবে। তবে বেশিরভাগ মানুষ এখানে প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে, তারা মুদ্রাগুলো কিনতে সক্ষম হবে না। অতিরিক্ত নগদ অর্থ না থাকলে এই স্বর্ণমুদ্রা থেকে সাধারণ মানুষের সরাসরি উপকৃত হওয়ার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন