পোষা প্রাণীর প্রতি মায়া এবং অন্যায়ের প্রতিবাদের এক ভিন্ন চিত্র দেখা গেল লালমনিরহাটে। পোষা ৫টি মুরগিকে হত্যা করা হয়েছে- এমন অভিযোগ নিয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় হাজির হলেন রশিদা বেগম নামে এক নারী।
শনিবার (৫ই এপ্রিল) বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানায় মৃত মুরগি নিয়ে হাজির হোন তিনি।
এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন রশিদা বেগম। এই ঘটনায় থানার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ উপস্থিত সবার মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগীর বাড়ি লালমনিরহাটের গোকুন্ডা ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকায়। তার স্বামী-সন্তান নেই। এলাকায় বিভিন্ন বাসায় কাজ করে সংসার চালান তিনি।

থানায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই নারী জানান, তিনি পরম যত্নে মুরগিগুলো লালন-পালন করছিলেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে তিনি মুরগিগুলোকে খাবার দিয়ে বাড়ির উঠানে ছেড়ে দেন। পরে বাড়ির পাশের একজনকে দেখে রাখতে বলে কাজে বেড়িয়ে যান। ফিরে এসে দেখতে পান, তার ১১টি মুরগিই মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তার বিশ্বাস, কেউ শত্রুতা করে বা ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ প্রয়োগ করে বা অন্য কোনো উপায়ে তার মুরগিগুলোকে মেরে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, ভিক্ষা করে এই মুরগিগুলো কিনেছি, কিন্তু কে বা কারা এই মুরগিগুলো মেরে ফেলেছে বুঝতে পারছি না। আমার এই মুরগি কয়টাই ছিল সম্বল। ডিম বিক্রি করতাম, বাচ্চা ফুটিয়ে বড় করার আশা ছিল। কারা আমার এমন সর্বনাশ করলো? আমি গরিব মানুষ, কার কী ক্ষতি করেছি? আমি এর সঠিক বিচার চাই। তাই ১১টি মুরগির মধ্যে ৫টি নিয়েই থানায় এসেছি প্রমাণ দেখাতে।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী জানান, ঘটনাটি কষ্টকর। একজন নারী তার ৫টি মৃত মুরগি নিয়ে বিচার চাইতে থানায় এসেছেন। আমরা তার অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। তবে তিনি মুরগি নিয়ে এসে কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় করেননি। শুধু আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে চলে গেছেন।
ডিবিসি/ এইচএপি