মেহেরপুরে মোবাইল ব্যাংকিং কর্মীদের হাত ধরে চলছে অনলাইন জুয়ার রমরমা ব্যবসা। অনলাইন জুয়া থেকে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন সদর উপজেলার সাবেক বিকাশ কর্মী সজীব শেখ। তার মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। পুলিশ বলছে, হুন্ডির মাধ্যমে এসব টাকা রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছে।
রাশিয়ার অনলাইন জুয়ার সাইট ওয়ান এক্স বিট সহ কয়েকটি বেটিংসাইটে দীর্ঘ দিন ধরে দেশে জুয়া খেলা চলছে। এজন্য একটি চক্রের মাধ্যমে টাকা, ডলারে রূপান্তরিত করা হয়। জুয়ার টাকা লেনদেনে জড়িত বিকাশসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কিছু অসাধু কর্মী।
এমনই একজন মেহেরপুর শহরের শেখ পাড়া এলাকার সাবেক বিকাশ কর্মী সজীব শেখ। জুয়ার টাকা লেনদেনের পাশাপাশি অনলাইন জুয়ার চ্যানেল নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অবৈধ কাজ করে রাতারাতি হয়েছেন কোটিপতি। চাকরি ছেড়ে কোটি টাকা ব্যয়ে ’খেলাঘর’ নামে একটি দোকান দিয়েছেন। নিজেই গড়ে তুলেছেন জুয়ার নেটওয়ার্ক। ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর শহরে তৈরি করছেন ব্যাডমিন্টন ইনডোর স্টেডিয়াম। এছাড়াও নামে বে-নামে রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।
বড় বাজারের জামান ক্লথ স্টোরের নামে বিকাশের এজেন্সি নিয়ে টাকার লেনদেন করত সজীব। দোকান মালিকের দাবি তার শ্যালক সজীব দোকানের ট্রেড লাইসেন্স চুরি করে এ কাজ করেছে।
সজীব শেখের বোনের স্বামী মেহফুজ জামান তপু বলেন, ‘শ্যালককে প্রশ্ন করি যে আমার নাম দিয়ে কি কোন সিম তুলে এসব ব্যবসা করছে কিনা। কারণ আমি শুনেছি যে তার বন্ধুরা এমন ব্যবসা করছে। সে আমাকে জবাবে বলে যে তার কোন এক বন্ধু ব্যবস্থা করে তার ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সিমাটা তোলে।’
গোপনে জুয়ার চ্যানেল থাকার কথাসহ বর্তমানে পুলিশের চাপ থাকার কথা বললেও ক্যামেরা সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন সজীব।
অভিযুক্ত সাবেক বিকাশ কর্মী সজীব শেখ বলেন, ‘আমার ভাই, দুলাভাই আমাকে কিছু সাহায্য করেছে আমার দোকান গড়ে তোলার জন্য। মেহেরপুরের মধ্যে সব থেকে বেশি বেচাকেনা হয় এই দোকানে। জুয়ার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবনা।’
পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইনের জুয়ার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে।
মেহেরপুর সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার মামুনুল আনছারি বলেন, ‘এ টাকাগুলো অনলাইনের জুয়ার হুন্ডির মাধ্যমে তারা বিদেশে পাচার করে দিত। আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
সম্প্রতি অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত একজন বিকাশ এজেন্টকে আটক করে সিআইডি। ছয়মাসে যার একাউন্ট থেকে অন্তত তিন কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন আরও কয়েকজন।